যে গ্রামের প্রায় সবাই ইউটিউবার

প্রকাশিত: ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫

নিজেস্ব প্রতিবেদক:

 

ইউটিউবের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে বর্তমানে অনেকেই সাবলম্বি হচ্ছেন। এটি এখন অনেকের প্রধান পেশাও। এর মাধ্যমে শহর বা গ্রামের বিভিন্ন বয়সের কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের এখন দেখা যায় বিশ্বজুড়ে। কিন্তু ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যে এমন এক গ্রাম রয়েছে, যে গ্রামের প্রায় সবাই ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটর।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের তুলসী গ্রামের প্রায় সবাই এখন ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটর। তারা ভিডিও তৈরি করেন গ্রামের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি, সামাজিক সমস্যা নিয়ে। সেগুলোতে হাজার হাজার লাইক, ভিউ এবং সাবস্ক্রাইবার পান। ইউটিউবের আয় তাদের জীবনযাত্রায় ব্যাপক বদল এনেছে।

এ গ্রামের আয়ের মূল উৎস ইউটিউব। গ্রামের মানুষদের হাতে হাতে মোবাইল। শুধু বিনোদনের মধ্যেই এর ব্যবহার আটকে না রেখে এটিকেই বরং গ্রামটির বেশির ভাগ মানুষ তাদের আয়ের অন্যতম উৎস করে নিয়েছেন।

জানা যায়, একসময় তুলসী গ্রামের মানুষদের জীবন ছিল দারিদ্র্যপীড়িত। দৈনন্দিন প্রয়োজনীয়তা মেটানোই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। আর এখন সে গ্রামের অধিবাসীরা ইউটিউবের মাধ্যমে নিজের জীবনযাত্রা দেখিয়ে রোজগার করছেন। গ্রামের পরিবেশ এবং জীবনযাপনকে নিয়ে তৈরি করা ভিডিওগুলো এখন শহরের মানুষের মধ্যেও জনপ্রিয়। গ্রামের প্রকৃত জীবনে একধরনের সাদাসিধে সৌন্দর্য রয়েছে এসব কনটেন্টে, যা শহরের মানুষদের কাছে আকর্ষণীয়।

তবে এই পরিবর্তন একদিনে আসেনি। করোনা মহামারির সময় থেকে গ্রামবাসী ইউটিউবের দিকে আগ্রহী হতে শুরু করেন। বাড়িতে বসে ইউটিউব ভিডিও দেখতে দেখতে তারা নিজেরাও ভিডিও তৈরির কথা ভাবতে শুরু করেন। সে চিন্তা থেকে ইউটিউব তাদের জীবনের অঙ্গ হয়ে ওঠে। এখন গ্রামের প্রায় সবাই সামাজিক এই মাধ্যমে ভিডিও তৈরি করে আয় করছেন।

গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই এখন মোবাইল

এবং ট্রাইপড রয়েছে। কেউ কেউ ভিডিও তৈরির আরও উন্নত সরঞ্জাম কিনেছেন ভিডিও করার জন্য। গ্রামবাসীর এই স্বতঃস্ফূর্ত ভিডিও তৈরির কারণে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো তুলসী গ্রামকে ‘ভারতের ইউটিউব ক্যাপিটাল’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

তুলসী গ্রামের ইউটিউব কনটেন্টের আকর্ষণীয় বিষয় হলো, তাদের নিজেদের প্রকৃত জীবন এবং গ্রামীণ পরিবেশ। কোনো রকম মেকআপ বা সাজগোজ ছাড়াই নিজেদের জীবন ফুটিয়ে তুলছেন তুলসী গ্রামের মানুষেরা।

তুলসী গ্রাম এখন শুধু একটি গ্রাম নয়, বরং ইউটিউবের দুনিয়ায় এক নতুন দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। করোনা-পরবর্তী সময়ে ইউটিউবের মাধ্যমে তাদের জীবনে এসেছে নতুন এক অধ্যায়। এটি তাদের জন্য সাফল্য এবং অর্থ উপার্জনের সুযোগ তৈরি করেছে।