
ক্রীড়া ডেস্ক:
বিশ্বে জুড়ে প্রায় ২০০ কোটি মুসলিমের বসবাস। রমজান মাস মুসলিমদের জন্য আত্মশুদ্ধির মাস। সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্য মাস জুড়ে সিয়াম পালন করে মুসলিম বিশ্ব। যেখানে ব্যতিক্রম নন মুসলিম ক্রীড়াবিদরা। রোজা রেখে খেলতে নামেন তারা। যদিও রোজা রেখে ফুটবলার খেলা মোটেও সহজ কথা নয়। তবে সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্য রেখে রোজা রেখেও ফুটবল খেলেন মুসলিম খেলোয়াড়রা।
করিম বেনজেমা-সাদিও মানে, মোহাম্মাদ সালাহদের রমজান মাসে রোজা রেখেই মাঠে নামেন। ইতফারের সময় মাঠেই খেজুর এবং পানি দিয়ে সাড়েন ইফতার। প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ, বুন্দেসলিগা এবং লা লিগার মতো লিগগুলোতে মুসলিম খেলোয়াড়দের ইফতারের জন্য দেওয়া হয়ে থাকে ৯০ সেকেন্ডের বিরতি। তবে উলটো পথে হাটছে ফরাসি ফুটবল ফেডারেশন। সম্প্রতি সংস্থাটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে মুসলিম খেলোয়াড়ের রোজা রাখার বিষয়ে দেওয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
চলতি মাসে অনুষ্ঠিত হবে উয়েফা নেশন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল পর্ব। এই টুর্নামেন্টে আগে কোয়ার্টার নিশ্চিত করেছে ফ্রান্স। সেমিতে ওঠার লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়া। আগামী ২১ মার্চ প্রথম লেগ এবং ২৩ তারিখ দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল। নেশন্স লিগের ফরাসি স্কোয়াডে পাঁচ জন মুসলিম খেলোয়াড় রয়েছে। তারা হলেন-উসমান ডেম্বেলে, এন’গোলো কান্তে, এলিয়াস গুয়েন্ডোজি, ইব্রাহিমা কোনাটে এবং ফেরল্যান্ড মেন্ডি। ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন থেকে বলা হয়েছে, ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার পর থেকে কোটায়ার ফাইনাল পর্ব শেষ হওয়া পর্যন্ত রোজা রাখতে পারবেন না কেউই। ফরাসি ফুটবল ফেডারেশনের এমন আচারণ বৈষম্যমূলক বলছেন অনেকে। যদিও ফরাসি ফুটবলে মুসলিম ফুটবলারদের নিয়ে বৈষমমূলক আচারণ নতুন কিছু নয়।
গত বছর ইফতারের সময়ে রেফারিদের খেলা বন্ধ না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যাতে রোজা রাখা খেলোয়াড়রা ইফতার করতে না পারেন। যার কারণে পিএসজি সমর্থকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। বিশাল ব্যানারে তারা লিখে এনেছিলেন ‘একটি খেজুর, এক গ্লাস পানি, এফএফএফের দুঃস্বপ্ন।’ এছাড়াও মুসলিম ফুটবলারদের বিরুদ্ধে বৈষমমূলক আচারণের কারণে গেল বছর ফুটবল ছাড়েন দেশটির অনূর্ধ্ব-১৯ দলের মিডফিল্ডার মাহামাদু দিয়াওয়ারা। ফুটবল ছাড়ার বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘তারা (ফ্রান্স) ইসলাম ধর্মকে সম্মান করে না।’
রোজা রাখার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পক্ষে এফএফএফের সভাপতি ফিলিপ ডায়ালো দেখিয়েছেন যুক্তি। তিনি বলেন, ‘কারো প্রতি কোনো বৈষম্য নেই। কিন্তু যখন আমরা ফরাসি দলে থাকি, তখন আমাদের অবশ্যই দলের কাঠামোকে সম্মান করতে হবে।’