দাবি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে গাজায় বন্দি মুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-হামাস আলোচনা পণ্ড

প্রকাশিত: ১১:০৭ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১০, ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট:

 

সম্প্রতি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি আলোচনায় অংশ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গাজায় আটক বন্দিদের মুক্তি ও যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হামাসের সঙ্গে সরাসরি এই আলোচনা শুরু করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন।

তবে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র ও হামাসের মধ্যকার এই আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। অবশ্য এ বিষয়ে কোনও পক্ষ থেকেই নিশ্চিত করে কিছু জানানো হয়নি। রোববার (৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, গাজায় ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে মার্কিন প্রশাসন এবং ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে বলে রোববার ইসরায়েলি গণমাধ্যম দাবি করেছে।

ইসরায়েলি চ্যানেল ১২ ইসরায়েলি একটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, হামাসের হাতে বন্দি অবস্থায় থাকা আমেরিকান নাগরিকত্বধারী ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা পণ্ড হয়ে গেছে। তবে এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত কোনও বিবরণ দেওয়া হয়নি।

ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম মার্কিন রাষ্ট্রদূত অ্যাডাম বোহলার এবং হামাস নেতা খলিল আল-হাইয়ার মধ্যে আলোচনায় অগ্রগতির খবর প্রকাশ করার কয়েক ঘণ্টা পরেই এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তবে হামাস বা ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে এই দাবির বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করে কিছু বলা হয়নি।

এর আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস গত বুধবার জানায়, আমেরিকান নাগরিকত্বধারী ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি নিয়ে আলোচনা করার জন্য হামাসের সাথে সরাসরি আলোচনা করছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।

এদিকে গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে আলোচনার জন্য ইসরায়েল সোমবার কাতারে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। ইসরায়েলি চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, নেতানিয়াহুর সরকার মধ্যস্থতাকারী কাতার এবং মিসরের অনুরোধে আলোচনায় অংশ নিতে সম্মত হয়েছে। এছাড়া এই আলোচনায় আমেরিকার সমর্থনও রয়েছে।

অন্যদিকে হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের এই অঞ্চলটি সফর করার কথা রয়েছে বলে ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কান জানিয়েছে।

ইসরায়েলের অনুমান, গাজায় এখনও ৫৯ জন বন্দি আটক রয়েছেন যাদের মধ্যে কমপক্ষে ২২ জন জীবিত। গাজা যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ে তাদের মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যার ফলে ইসরায়েলকে গাজা থেকে সম্পূর্ণরূপে তার বাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে এবং যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে।

প্রসঙ্গত, গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তিন-পর্যায়ের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে বন্দি বিনিময় এবং স্থায়ী শান্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে ৪৮ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া এই আগ্রাসনে গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

এছাড়া ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।