হকিতে দেশের চেয়ে ব্যক্তিস্বার্থ আগে

প্রকাশিত: ১২:০০ অপরাহ্ণ, মার্চ ১০, ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক:

 

জাতীয় হকি দলের সাবেক অনেকের মতে রাসেল মাহমুদ জিমি এখনো জাতীয় দলে খেলার মতো পূর্ণ যোগত্যা রয়েছে। যাদের সঙ্গে কথা কথা হয়েছে তাদের সবার এক মত ‘খেলোয়াড় জিমির পারফরম্যান্স নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই’। এখন যারা জাতীয় দলে রয়েছেন তাদের ফিটনেস জিমির সঙ্গে তুলনা করলে জিমিকে উচ্চ স্থানেই রাখতে হবে। এন্ডুরেন্স, স্ট্যামিনা, স্ট্রেন্থ-যেটাই বলা হোক কোনো দিক থেকে জিমিকে পিছিয়ে রাখার সুযোগ নেই। তার পরও জিমিকে জাতীয় দলের কুপার টেস্টের জন্য রাখা হয়নি। জাতীয় দলের অনুশীলন চলছে হকি স্টেডিয়ামে। খেলোয়াড়রাও কোনো মন্তব্য করতে রাজি না। জিমির মতো সিনিয়র অভিজ্ঞ খেলোয়াড় থাকলে অন্যদের জন্য সেটি উদ্দীপনা। কিন্তু মুখে কিছু বলার সাহস নেই। প্রকাশ করার সুযোগ নেই। এমন কি জাতীয় দলের বর্তমান কোচ মামুন উর রশিদের চোখেও জিমি ভালো খেলোয়াড়। তাতে কী? জিমিকে কুপার টেস্টে নেওয়ার কথাটা কি কেউ ফেডারেশনে তুলেছিলেন।

জিমি ‘দোষ’ চোখে চোখ রেখে কথা বলেন। যারা মেনে নিতে পারেন না তারা অন্যভাবে সুযোগ মতো জিমিকে অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। জিমি এমন ঘটনার শিকার হয়ে অনেক বার শাস্তির মুখে পড়েছেন। আর এজন্য প্রতিহিংসা পরায়ন ফেডারেশন কর্মকর্তা তার আস্থাভাজন আম্পায়ার দিয়ে খেলার মাঠের বাইলজের আইন প্রয়োগ করে জিমিকে নানা ভাবে শাস্তি দিয়েছেন। সেসব ইস্যু টেনে ফেডারেশনের সভায় তুলে ধরা হয়।

হকিতে খোঁজ নিলে দেখা যায় দুই তিন জন ব্যক্তির রোষানলে পড়ে জিমিকে খেসারত দিতে হচ্ছে। পারফরম্যান্সের বিচার পরে, কুপার টেষ্টের জন্য ডাকেনি, হকির অনেকের মতে কুপার টেস্ট ডাকলে জিমি সহজেই পাশ করে যাবেন। এরই মধ্যে একটি কুপার টেস্টে টার্গেট ছাড়িয়ে গেছেন জিমি। সন্দেহ নেই অনুশীলনে নেওয়া হলে জিমি সেখানেও অন্যদের চেয়ে ভালো করতে পারতেন। সেটিও ঠেকানো যাবে না। হাতে গোনা দুই-এক জনই রয়েছেন যারা জিমির শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তার পারফরম্যান্স আড়াল করেন। মোহামেডান ছাড়াও জিমি নৌবাহিনীর খেলোয়াড়। শৃঙ্খলার প্রশ্নে নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, সেনাবাহিনী এক চুল ছাড় দেয় না। শৃঙ্খলা নেই, এমন কোনো খেলোয়াড়কে নৌবাহিনীও ঘরে তুলবে না, সেটি নিশ্চিত করেই বলা যায়। জিমি নৌবাহিনীতে খেলছেন, ভালোভাবেই খেলছেন এবং ২২ বছর শৃঙ্খলা এবং ফিটনেস মেইনন্টেন করেই ক্লাব ও জাতীয় দলে খেলে আসছেন তিনি।

একজন খেলোয়াড় অবসর নেবেন কি নেবেন না, সেটি সম্পূর্ণ সেই খেলোয়াড়ের ওপর নির্ভর করে। পারফরম্যান্স বিচারে এগিয়ে থাকলে কেন অবসর নেবেন। জোর করে কাউকে অবসর নিতে বাধ্য করতে পারে না ফেডারেশন। নিষিদ্ধ খেলোয়াড়কে জাতীয় দলে এনে বিশ্বকাপ জিতেছে ইতালি। জলন্ত উদাহরণ সুনীল ছেত্রী। সুনীল নিজ থেকে অবসর নিয়েছিলেন। ১ বছর আগে। আগামী ২৫ মার্চ এশিয়ান কাপ ফুটবল বাছাইয়ে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ। দেশের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে সুনীলকে ফিরিয়ে এনেছে ভারতীয় ফুটবল সংস্থা এআইএফএফ। ভারত দেখিয়ে দিল কীভাবে দেশের স্বার্থটাকে গুরুত্ব দিতে হয়। এক কথায় সুনীল ছেত্রী অবসর ভেঙ্গে জাতীয় দলের ডাকে চলে এসেছেন। আর বাংলাদেশের হকি ফেডারেশনে দেশের চেয়ে ব্যক্তি স্বার্থ আগে।