সয়াবিনের সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে, ফলের দামেও স্বস্তি

প্রকাশিত: ১:৫৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৫, ২০২৫

সেলিনা আক্তার:

 

পবিত্র রমজানের মাঝামাঝিতে এসে নিত্যপণ্যের বাজারে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে। রমজানের আগে থেকেই খুচরা বাজারে সয়াবিন তেলের যে সংকট ছিল, তা কিছুটা কমেছে। বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ আগের তুলনায় বেড়েছে। তবে তা এখনো চাহিদার তুলনায় কম। এছাড়া, ব্রয়লার মুরগি, পেঁয়াজসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম কমেছে। ফলের দামেও কিছুটা স্বস্তি মিলছে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর নিউ মার্কেট, তুরাগ এলাকার নতুনবাজার ও শান্তিনগর বাজারে খোঁজ নিয়ে বিভিন্ন পণ্যের দরদামের এ চিত্র পাওয়া যায়। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, রমজানের শুরুতে ক্রেতাদের কেনাকাটার যে চাপ থাকে, এক সপ্তাহ পেরিয়ে যেতেই তা কমতে থাকে। ফলে এখন নিত্যপণ্যের বাজারে ক্রেতাদের কেনাকাটার কোনো চাপ নেই। ফলে দামও কিছুটা কমতির দিকে। গতকাল এই বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে আগের তুলনায় বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ বেড়েছে। এসব দোকানের বিক্রেতারা জানান, ডিলাররা এখন বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ করছেন, তবে তা চাহিদার তুলনায় কম। তুরাগ এলাকার একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের স্বত্বাধিকারী সাদ্দাম হোসেন জানান, পাঁচ কার্টন বোতলজাত সয়াবিন তেলের অর্ডার দিলে দুই কার্টন তেল সরবরাহ করছে। এই বাজারেরই আরেক বিক্রেতা জানান, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা সয়াবিন তেলের দাম অনেকটাই কমেছে। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৭ থেকে ২০ টাকা কমে ১৬০ থেকে ১৬৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিনে তিন টাকা কমে ৩৪৫ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ১৭৫ থেকে ১৭৮ টাকা ও পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ৮৪৫ থেকে ৮৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে স্বস্তি ফিরেছে ফলের বাজারেও। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি তরমুজ ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে, যা রমজানের শুরুতে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া মাল্টা কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমে ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য ফলের মধ্যে আপেল ৩০০ থেকে ৩৮০ টাকা, পেয়ারা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বরই ৫০ থেকে ৬০ টাকা, আঙুর ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, কমলা ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, নাশপাতি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে, যা রমজানের শুরুর তুলনায় ফলভেদে কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা কম। আলু-পেঁয়াজের দাম কমেছে। গতকাল বাজারে প্রতি কেজি আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা ও দেশি পেঁয়াজের কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরাবাজারে ব্রয়লার মুরগির দামও কমেছে। কেজিতে ১০ টাকা কমে বর্তমানে তা ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি, যা সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কম। মুরগির পাশাপাশি ডিমের দামও বেশ কমেছে। গতকাল বাজারে প্রতি ডজন ফারমের বাদামি রঙের ডিম ১২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এদিকে ব্রয়লার মুরগির দাম কমলেও গরুর মাংসের দাম কমেনি। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা দরে। এছাড়া লেবুর দাম সেভাবে কমেনি। খুচরাবাজারে প্রতি হালি লেবু ৫০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে গতকাল কাওরান বাজারের লেবুবিক্রেতা জালাল বলেন, রমজানে শরবত তৈরির কারণে লেবুর চাহিদা বাড়ে। এছাড়া এখন মানুষের জ্বরও হচ্ছে। এসব কারণে লেবুর চাহিদা বাড়ায় দাম বেশি।