রমজানে ‘তাব তাবি তাব’ গানে মজেছে নেটিজেনরা

প্রকাশিত: ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৬, ২০২৫

বিনোদন ডেস্ক :

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ‘তাব তাবি তাব’ ইসলামিক কবিতা। রমজানের এই সময়ে যা নিয়ে চলছে নেটিজেনদের মাঝে মিম শেয়ার থেকে শুরু করে অসংখ্য রিল ও হাস্যরসাত্মক কন্টেন্টে ফিচার তৈরি করা হচ্ছে।

তবে এই কতিতার পেছনে রয়েছে ১২০০ বছরের পুরোনো একটি প্রাচীন ও চমকপ্রদ ইতিহাস, যা ইসলামিক সাহিত্য ও কবিতার ঐতিহ্যের সাথে জড়িত।

প্রাচীন ইতিহাসের সন্ধানে :

ইতিহাসবিদদের মতে, ‘তাব তাবি তাব’ সুরটি আসলে একটি প্রাচীন আরবি কবিতার অংশ, যা আব্বাসীয় খিলাফতের সময়কার (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ)। কথিত আছে যে, এই কবিতাটি ৮ম শতাব্দীতে বিখ্যাত কবি আল-আসমাই রচনা করেছিলেন।

খলিফা আল-মনসুরের কৌশল :

আব্বাসীয় খলিফা আল-মনসুর (৭৫৪-৭৭৫ খ্রিষ্টাব্দ) তার অসাধারণ স্মৃতিশক্তির জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তিনি প্রায়ই কবিদেরকে তার দরবারে ডেকে তাদের কবিতা আবৃত্তি করতে বলতেন এবং শুনে তা মুহূর্তেই মুখস্থ করে ফেলতেন। এরপর তিনি দাবি করতেন যে কবিতাটি তার নিজের রচনা এবং কবিদেরকে হতবাক করে দিতেন।

আল-আসমাইয়ের চালাকি :

কবি আল-আসমাই খলিফার এই কৌশল বুঝতে পেরে একটি অদ্ভুত ও জটিল কবিতা রচনা করেন। এই কবিতার ছন্দ ও শব্দবিন্যাস ছিল এমন যে তা মুখস্থ করা প্রায় অসম্ভব। কবিতাটির একটি অংশ ছিল:

‘ফি ওয়াসাত বুস্তান হালী, বাজার ওয়াল-সুরুর লী
ওয়া লাউদু দান্দান দানালী, আত-তাবল তাবতাব তাবালী
তাব তাবি তাব তাব তাবালী, তাব তাবি তাব তাব তাবালী।’

এই কবিতাটি শুনে খলিফা আল-মনসুর হতভম্ব হয়ে যান এবং কবি আল-আসমাইয়ের প্রতিভাকে স্বীকৃতি দেন।

লোককথা থেকে মিম পর্যন্ত :

এই প্রাচীন কবিতার ‘তাব তাবি তাব তাব তাবালী, তাব তাবি তাব তাব তাবালী’ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলেছে মিম শেয়ার। ‘তাব তাবি তাব’ সুরটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং রমজানের সময়ে এটি বিশেষভাবে আলোচিত হচ্ছে।

ইতিহাস ও বিনোদনের মেলবন্ধন :

যদিও এই গল্পটি লোককথা হিসেবে বিবেচিত হয়, তবুও এটি ইসলামিক সাহিত্য ও কবিতার সমৃদ্ধ ইতিহাসের একটি অংশ। ‘তাব তাবি তাব’ সুরটি আজও মানুষকে মাতিয়ে রাখছে, প্রমাণ করে যে শিল্প ও সংস্কৃতি সময়ের সীমানা অতিক্রম করতে পারে।

এই সুরটি শুধু মিম বা বিনোদনের মাধ্যমই নয়, এটি আমাদেরকে ইসলামিক সভ্যতার গৌরবময় সাহিত্যিক ঐতিহ্যের সাথেও পরিচয় করিয়ে দেয়।