
নিজেস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের জনবহুল রাজধানী ঢাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা যেন কমছেই না। গরম বাড়ার পাশাপাশি দিন দিন মেগাসিটি ঢাকার বায়ুদূষণও বাড়ছে। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সকাল ১০টা নাগাদ আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্যানুযায়ী, ১৬৬ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। অর্থাৎ এখানকার বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’।
একই সময়ে, ১৮৫ স্কোর নিয়ে প্রথম স্থানে আছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। এখানকার বাতাসের মান নাগরিকদের জন্যে ‘অস্বাস্থ্যকর’। এছাড়াও একই তালিকায় ১৭৯ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে পাকিস্তানের শহর লাহোর। তৃতীয় অবস্থানে থাকা আরব আমিরাতের বৃহত্তম শহর দুবাইয়ের স্কোর ১৭৪ এবং রাজধানী ঢাকা ১৬৬ স্কোর নিয়ে ষষ্ঠ অবস্থানে আছে।
দেশে বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা হয় একিউআই স্কোর একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত দিয়ে। যেটি মানুষকে সঠিক তথ্য দেয়। যেকোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে কি না সেই বিষয়েও জানা যায়।
আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, বাতাসের গুণমান নির্ধারণের একিউআই স্কেল অনুযায়ী ০-৫০ ভালো, ৫১-১০০ মাঝারি, ১০১-১৫০ সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়।
এছাড়া ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়, ৩০১ বা তার বেশি একিউআই স্কোরকে ‘দুর্যোগপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশের একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুসারে, এই বায়ু দূষণের কারণে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর অন্তত ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার বায়ুদূষণ নাগরিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে। বাইরে বের হলে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শিশু, প্রবীণ ও অসুস্থ ব্যক্তিদের বাড়ির বাইরে কম বের হতে বলা হয়েছে। শহরে সবুজায়ন ও গাছপালা বৃদ্ধির মাধ্যমে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ।