বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় ছয়টি প্রধান চ্যালেঞ্জ!

প্রকাশিত: ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৯, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় ছয়টি প্রধান চ্যালেঞ্জ বা সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে জানিয়েছে গভার্নেন্স এডভোকেসি ফোরাম। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় জন অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং তৃণমূল মানুষের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা অপরিহার্য বলে জানায় ফোরামটি।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হল ‌‘গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণ ও জন-আকাঙ্ক্ষার আলোকে স্থানীয় সরকার সংস্কার’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় গভার্নেন্স এডভোকেসি ফোরামের সমন্বয়কারী ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী। বাংলাদেশে অবস্থিত সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের সহায়তায় গভার্নেন্স এডভোকেসি ফোরাম ও ইউএনডিপির যৌথভাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় ছয়টি প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো হচ্ছে— প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা, ক্ষমতার অতিকেন্দ্রীকরণ, আর্থিক সীমাবদ্ধতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং জেন্ডার ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তির সীমিত সুযোগ।

স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় সংস্কারের বেশকিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। প্রস্তাবনাগুলো হচ্ছে— স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ও দায়িত্ব বিভাজন, বিশেষ করে উপজেলা পরিষদে সংসদ সদস্যদের উপদেষ্টার ভূমিকা সংবলিত বিধান বাতিল করা; উপজেলার প্রধান হিসেবে উপজেলা চেয়ারম্যানের ভূমিকা সুনির্দিষ্ট করা এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাচিবিক দায়িত্ব সুস্পষ্ট করা; উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানদের ভূমিকা, দায়িত্ব সুনির্দিষ্টও কার্যকর করা; সব স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধিদের সম্মানী ভাতার পরিমাণ বাজারমূল্য বিবেচনায় সম্মানজনকভাবে বৃদ্ধি করা।

স্থানীয় সরকার পর্যায়ে নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তনের প্রস্তাবনায় রয়েছে, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সব স্তরে সরাসরি ও নির্দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচন আয়োজন করা; নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে একই ব্যক্তি যাতে দুই বা তিনবারের বেশি নির্বাচিত না হন সে ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করা; প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও সমন্বয়ের সুবিধার্থে কাছাকাছি সময়ে সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।

স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার বিষয়ে বলা হয়েছে, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির কাছে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত পরিষদের কাছে তাদের আওতাধীন কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর কার্যক্রম মনিটরিং এবং তাদের বার্ষিক কার্যক্রম প্রতিবেদন (এপিআর) লেখা কার্যকর করা।

স্থানীয় উন্নয়নের সর্বস্তরে জন অংশগ্রহণ ও তৃণমূল মানুষের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সব কমিটিতে শ্রেণি-পেশা-লিঙ্গ-বয়স-প্রতিবন্ধিতা-জাতি-সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। সামাজিক নিরীক্ষা ও গণশুনানি পরিচালনা, ওয়ার্ড সভা, উন্মুক্ত বাজেট ইত্যাদি কার্যক্রমে জন অংশগ্রহণ বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা।

প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার বিভাগে একটি নিবেদিত গবেষণা, ডকুমেন্টেশন ও নীতি তথ্য ভাণ্ডার স্থাপন করা। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে এনআইএলজির কাজের পরিধি বৃদ্ধি করা ও বিকেন্দ্রীকরণ করা।

ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক কানিজ ফাতেমার সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন এনআরডিএসের নির্বাহী পরিচালক আবদুল আউয়াল।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মিডিয়া প্রফেশনাল গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক সমর রায়, শিল্ডের নির্বাহী পরিচালক মো. মাহবুব আলম ফিরোজ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোহাম্মদ মহসিন কবীর, ডেমোক্রেসিওয়াচের কর্মসূচি পরিচালক ফিরোজ নুরুন নবি যুগল, নারীপক্ষের সদস্য রওশন আরা প্রমুখ