রাজবাড়ীর সাবেক এমপি কাজী কেরামত কারাগারে

প্রকাশিত: ১:৩৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৭, ২০২৫

রাজবাড়ী প্রতিনিধি:

রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীকে (৭১) গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুর পৌনে ১২টায় তাকে আদালতে তোলা হয়। এসময় রাজবাড়ী সদর আমলি আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তামজিদ আহমেদ তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে গতকাল রোববার (৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশেষ অভিযান চালিয়ে রাজধানীর ঢাকার মহাখালী থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) তাকে গ্রেপ্তার করে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজবাড়ীতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

পুলিশ জানায়, তার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনের অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।

রাজবাড়ী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুর রাজ্জাক-২ বলেন, কাজী কেরামত আলী বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওপর হামলার মামলায় এজাহারনামীয় দুই নম্বর আসামি। গত ১৮ জুলাই বড়পুলে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় ৩০ আগস্ট তার নামে মামলা হয়। তার হুকুমে অন্য আসামিরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা করে তাদের আহত করে ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে। এই মামলায় তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ রয়েছে বিধায় রাজবাড়ী সদর আমলি আদালতের বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।গ্রেপ্তারকৃত কাজী কেরামত আলী রাজবাড়ী শহরের সজ্জনকান্দা এলাকার বাসিন্দা। তিনি প্রয়াত গণপরিষদ সদস্য কাজী হেদায়েত হোসেনের বড় ছেলে। তিনি রাজবাড়ী-১ (সদর-গোয়ালন্দ) আসনের ৬ বারের সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য। এছাড়া তিনি সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন। তিনি রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি।

জানা গেছে, গত ৩০ আগস্ট সাবেক সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী ও তার ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলীসহ ১৭০ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। রাজবাড়ী সদর থানায় মামলাটি করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী রাজিব মোল্লা।

রাজবাড়ী সরকারি কলেজের ছাত্র রাজিব মোল্লা মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, গত ১৮ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র, অভিভাবক ও শিক্ষকরা রাজবাড়ী শহরের বড়পুল মোড়ে অবস্থান নেন। বিকেলে উল্লেখিত এজাহারনামীয় আসামিরা তাদের সঙ্গীদের সঙ্গে দেশীয় অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে অতর্কিতভাবে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালান। সাবেক সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলীর নির্দেশে আসামিরা তাদের সঙ্গীদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনকারীদের হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা নিক্ষেপ করে ও গুলি করে। এ ছাড়া আন্দোলনকারীদের বেধড়ক মারধর করে গুরুতর জখম করা হয়।

আসামিরা আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেননি। আসামিদের আক্রমণে সোনিয়া আক্তার স্মৃতি, নুরুন্নবী, আশিক ইসলাম অভি, রাজিব মোল্লা, মেহেরাব, আলতাফ মাহমুদ সাগর, উৎস সরকার, রিয়াজসহ অসংখ্য আন্দোলনকারী আহত হন।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কাজী কেরামত আলী আত্মগোপনে ছিলেন।