৫০০ একর মৎস্য খামার বিলীনের শঙ্কা মিরসরাইয়ে

প্রকাশিত: ১২:৪২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২১, ২০২৫

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

 

মিরসরাইয়ে সিডিএসপি বাঁধ ভেঙে ফেনী নদীর গর্ভে বিলীন হতে বসেছে ৫০০ একর মৎস্য খামার। ইতিমধ্যে বাঁধের সামনে নদীর অংশে অন্তত ২০০ একর মৎস্য খামার বিলীন হয়ে গেছে। বাঁধটির এমন ভাঙনে হুমকিতে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থাও।

সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যার পর থেকে ধীরে ধীরে বাঁধটি বিলীন হওয়ার পথে। ফেনী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ২০০ একরের মত মৎস্য খামার বিলীন হয়ে গেছে। ১৯৮৫-৮৬ অর্থ বছরে ফেনী, সোনাগাজী ও মিরসরাই এলাকাকে বন্যা ও ভাঙনের হাত থেকে রক্ষায় মুহুরী সেচ প্রকল্প করা হয়। ইতিমধ্যে ফেনী নদীর ভাটি এলাকায় পলি জমায় এই প্রকল্পের কার্যকারিতাও হারাতে বসেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় লোকজন জানায়, চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্টের (সিডিএসপি) আওতায় মিরসরাইয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা বঙ্গোপসাগরের ভাঙ্গন থেকে রক্ষা করতে ১৯৯৪ সালে ১১.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বাঁধ নির্মাণ করা হয়। বাঁধটি নির্মাণের পর ইছাখালী ও ওসমানপুর ইউনিয়ন এলাকায় বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে মৎস্য চাষ শুরু হয়। সিডিএসপি বাঁধের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে গড়ে উঠে শত শত মৎস্য প্রকল্প।

চট্টগ্রাম ও ফেনী সীমান্তবর্তী ফেনী নদীর স্বাভাবিক গতিও বদলে গেছে। ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে সিডিএসপি বাঁধ। এই সিডিএসপির বাঁধে ভাঙনের ফলে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে উপজেলার ওসমানপুর ও ইছাখালী ইউনিয়নের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ। সিডিএসপির বাঁধ পুরোপুরি ভেঙ্গে গেলে এই বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দেবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। নদীগর্ভে বিলীন হবে কয়েকশো মৎস্য প্রকল্প। ভাঙন অব্যাহত থাকলে ভাঙনকবল এলাকার স্বল্প দূরত্বে বাস্তবায়িত হতে যাওয়া দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন কাজও ঝুঁকিতে পড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, মুহুরী সেচ প্রকল্পের ২ কিলোমিটার দক্ষিণে অন্তত ২০০ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ভাঙনের কারনে অনেক জায়গায় বাঁধের অর্ধেকেরও বেশি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বাঁধের কিছু অংশে দেখা দিয়েছে বড় ফাটল। বাঁধের ভাঙনের কবল এলাকায় পায়চারি করতে দেখা যায় পূর্ব পাশের মৎস্য প্রকল্পের কয়েকজন চাষিকে।

মিরসরাইয়ের মৎস্য চাষি নজরুল ইসলাম বলেন, সিডিএসপি বাঁধ ঘেঁষে পূর্ব পাশে ১৯ একর মৎস্য প্রকল্প রয়েছে আমার। বাঁধে ভাঙন শুরু হাওয়া আমার প্রকল্পটি হুমকির মুখে পড়েছে। ভাঙনের ঝুঁকি থাকায় মৎস্য খামারটি এবার চাষ বন্ধ রেখেছি। এখানে আমি ছাড়াও স্থানীয় ফরিদ মেম্বার, নুরুল মোস্তফা সহ আরও অন্তত ৫০ জন খামারির মৎস্য প্রকল্প ভাঙনের হুমকিতে আছে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহফুজা জেরিন বলেন, উপজেলার উত্তর ইছাখালী এলাকায় ফেনী নদীর পাড়ে সিডিএসপির বাঁধে ভাঙনের বিষয়টি আমি জেনেছি। এ বিষয় ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। শীঘ্রই পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অলক দাশ বলেন, সিডিএসপির বাঁধে ভাঙনের বিষয়টি জেনে আমাদের কর্মকর্তারা ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছে। জরুরি প্রকল্পের মাধ্যমে দ্রুত বাঁধটির ভাঙন রোধের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।