
ডেস্ক রিপোর্ট:
পৃথিবীর চেনা রঙের বাইরে এক সম্পূর্ণ নতুন রঙের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ‘ওলো’ নামের এই রঙকে বলা হচ্ছে এমন এক রং, যা আগে কখনো দেখা যায়নি এবং সাধারণ চোখে দেখা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ সাময়িকী।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্কলে ক্যাম্পাসের তড়িৎ প্রকৌশলী রেন এনজি বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই অনুমান করেছিলাম, এমন কিছু দেখতে যাচ্ছি যা একেবারেই নতুন। রঙটি অনেক গাঢ় এবং সাধারণ ভাষায় তা প্রকাশ করা সম্ভব নয়।’
গবেষকেরা ‘ওলো’ রঙ সম্পর্কে ধারণা দিতে ফিরোজা রঙের একটি বর্গক্ষেত্রের ছবি প্রকাশ করলেও জানিয়েছেন, বাস্তবে এই রঙটি চোখে দেখা বা মনিটরে প্রদর্শনের মাধ্যমে বোঝানো যায় না। বিজ্ঞানী অস্টিন রুর্দা বলেন, ‘এটি এমন এক রঙ, যা আমরা সচরাচর দেখি না। বরং আমরা যা দেখি, সেটি হলো এই রঙের একটি ‘ছায়া’। বাস্তবের সব রঙ ‘ওলো’র তুলনায় অনেকটাই ফিকে মনে হবে।’
মানুষের চোখে তিন ধরনের কোণ কোষ থাকে, যেগুলো দীর্ঘ, মাঝারি এবং ছোট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের প্রতি সংবেদনশীল। লাল আলো উদ্দীপিত করে দীর্ঘ কোণকে, নীল আলো ছোট কোণকে। কিন্তু কোনো প্রাকৃতিক আলো মাঝারি কোণকে যথাযথভাবে উদ্দীপিত করতে পারে না। ফলে এই কোষের জন্য নির্দিষ্ট রঙ সাধারণত চোখে ধরা পড়ে না।
এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে গবেষকেরা রেটিনা স্ক্যান করে স্বেচ্ছাসেবকদের চোখের মাঝারি কোণ নির্ধারণ করেন এবং সেখানেই লেজার আলোর বিশেষ ঝলক ফেলে ‘ওলো’ রঙের উদ্ভব ঘটান। বিজ্ঞানীদের দাবি, এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন রঙের অভিজ্ঞতা যা আগে কখনো মানুষের চোখে ধরা পড়েনি।
তবে তারা আরও জানিয়েছেন, এই রঙ এখনও প্রযুক্তিগতভাবে বাস্তব জীবনে ব্যবহার উপযোগী নয়। কোনো স্মার্টফোন, টিভি বা এমনকি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (ঠজ) হেডসেটেও এই রঙ দেখানোর মতো প্রযুক্তি এখনো তৈরি হয়নি।