পোপের মৃত্যুতে ইসরায়েল শোক জানিয়ে আবার মুছেও ফেলল

প্রকাশিত: ২:০০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৩, ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট:

 

পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোকবার্তা প্রকাশ করেছিল ইসরায়েল। তবে বার্তা প্রকাশের কিছুক্ষণের মধ্যেই সেটি মুছে ফেলায় শুরু হয়েছে বিতর্ক ও নানা জল্পনা। এ নিয়ে দেশটির পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ইসরায়েলের সরকারি এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে পোপের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লেখা হয়, ‘শান্তিতে বিশ্রাম নিন, পোপ ফ্রান্সিস। তার স্মৃতি হোক আশীর্বাদধন্য।’ বার্তার সঙ্গে পোপের জেরুজালেম সফরের একটি ছবিও সংযুক্ত ছিল।

তবে বার্তাটি কিছুক্ষণের মধ্যেই সরিয়ে ফেলা হয়। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট জানিয়েছে, গাজায় চলমান সামরিক অভিযানের কঠোর সমালোচনার জেরে পোপের প্রতি বিরূপ মনোভাব থেকেই হয়তো বার্তাটি মুছে ফেলা হয়েছে।

পত্রিকাটি আরও জানায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পোপ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একাধিক ‘সংবেদনশীল মন্তব্য’ করেছিলেন এবং শোকবার্তাটি ‘ভুলবশত’ পোস্ট করা হয়েছিল। রয়টার্স এ বিষয়ে মন্তব্য চাইলে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

উল্লেখ্য, পোপ ফ্রান্সিস গত নভেম্বরে গাজায় ইসরায়েলের অভিযানকে সম্ভাব্য গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছিলেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি গাজার মানবিক পরিস্থিতিকে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেন। এসব বক্তব্য ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করে।

পোপের মৃত্যুর পর হামাস এবং হিজবুল্লাহ পৃথকভাবে শোক জানিয়েছে। তারা পোপের আন্তঃধর্মীয় সংলাপ ও মানবিক মূল্যবোধের প্রশংসা করে বিবৃতি দিয়েছে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পোপের মৃত্যু নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতি শোকবার্তা পাঠিয়ে পোপ ফ্রান্সিসকে ‘গভীর বিশ্বাস এবং সীমাহীন সহানুভূতির মানুষ’ হিসেবে আখ্যা দেন।

পোপের ১২ বছরের নেতৃত্বে ক্যাথলিক চার্চ ও ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা ঘনিষ্ঠ হয়েছিল। তিনি ইহুদি বিদ্বেষের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন এবং প্রতিদিন গাজার খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন। ২০১৪ সালে তিনি জেরুজালেমের পশ্চিম প্রাচীর এবং ইসরায়েল নির্মিত বিভাজনের দেয়ালে প্রার্থনা করেন।

তবে শোকবার্তা প্রকাশ ও তা গোপনে মুছে ফেলার ঘটনায় ইসরায়েল-ভ্যাটিকান সম্পর্কের জটিলতা নতুনভাবে সামনে এসেছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সংবেদনশীলতার উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।