শেখ হাসিনার সঙ্গে অভিনেতা সাংবাদিক আইনজীবীসহ আসামি ৪০৭
মিরপুরে গুলি করে হত্যা

নিজেস্ব প্রতিবেদক:
জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যা এবং প্ররোচনার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনকে আসামি করে আরও একটি মামলা হয়েছে।
মামলায় আসামিদের মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, এমপি এবং দল ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের হুকুমের আসামি করা হয়েছে। পাশাপাশি সাবেক তিন আইজিপি, স্বরাষ্ট্র সচিব, সাবেক ডিএমপি কমিশনারসহ শতাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর, সাবেক মেয়র, দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার, আমলা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, আইনজীবী, অভিনেতা, ব্যাংক মালিকের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য আর্থিক সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলায় আসামির তালিকায় রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, তাজুল ইসলাম, হাছান মাহমুদ, কামরুল ইসলাম, ফারুক খান, আসাদুজ্জামান নূর, জাহিদ মালেক স্বপন, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, নূরে আলম চৌধুরী লিটন, সাবের হোসেন চৌধুরী, লোটাস কামাল, নওফেল চৌধুরী, শাজাহান খান, আব্দুর রাজ্জাক, শেখ হেলাল, তারানা হালিম, সানজিদা খানম, ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, নিক্সন চৌধুরী, নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, শামীম ওসমান, নাজমুল হাসান পাপন, কাজী নাবিল আহমেদ, এ কে আজাদ, তারেক সিদ্দিকী, তৌফিক-ই-ইলাহী, গওহর রিজভী, মশিউর রহমান, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর, পরিচালক সাদাত সোবহান তানভীর, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ, মোহাম্মদ মইনদ্দিন আব্দুল্লাহ, অভিনেতা ইরেশ যাকের, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
আসামি সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন ইকবাল সোবহান চৌধুরী, শাবান মাহমুদ, আরিফ হাসান, মোজাম্মেল হক বাবু, নাঈমুল ইসলাম খান, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, নঈম নিজাম, সুভাষ সিংহ রায়, শ্যামল দত্ত, ফারজানা রুপা, মুন্নী সাহা, জ ই মামুন, শাকিল আহমেদ, মিথিলা ফারজানা, মনজুরুল আহসান বুলবুল, হারুন উর রশীদ, নাসিরুদ্দীন সাথী, নবনীতা চৌধুরী, আবুল কালাম আজাদ, ওমর ফারুক, শফিকুর রহমান, ফরিদা পারভীন ও মাসুদা ভাট্টি।
আইনজীবীদের মধ্যে রয়েছেন সৈয়দ রেজাউর রহমান, নজিবুল উল্যাহ হিরু, দুদকের সাবেক দুই প্রসিকিউটর খুরশীদ আলম খান ও মোশাররফ হোসেন কাজল।
সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ, কে এম নুরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল। ইসির সাবেক তিন সদস্য মোহাম্মদ সাদিক, হেলাল উদ্দিন আহমদ ও ড. সাদিক।
৫ আগস্ট রাজধানীর মিরপুরে বিএনপিকর্মী মাহফুজুল আলম শ্রাবণকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পী ঢাকার সিএমএম আদালতে ২০ এপ্রিল মামলা করেন। ওই দিন আদালত তাঁর জবানবন্দি নিয়ে অভিযোগটি মিরপুর মডেল থানার ওসি নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। এজাহারে অভিযুক্তদের চারটি ক্যাটেগরিতে ভাগ করে সবার সম্পৃক্ততা ও সুনির্দিষ্ট অপরাধের ধরন উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি মিরপুর মডেল থানার ওসি সাজ্জাদ রোমন তদন্ত করছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, শ্রাবণের বাবার নাম মোশাররফ হোসেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার দোগাছী এলাকায়। তিনি মিরপুরে থাকতেন। গত ৫ আগস্ট দুপুরে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিল মিরপুর শপিং কমপ্লেক্স ও মিরপুর মডেল থানার মধ্যবর্তী রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আসামিরা তাঁকে থানার সামনে গুলি করে। স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে পাশের একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে স্বজন ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করেন।