বিশ্বে আলোড়ন তোলা বৈভব বললেন, ‘এসব আমার রোজকার অভ্যাস’
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি

ক্রীড়া ডেস্ক :
আইপিএলের সর্বশেষ নিলামে এক কিশোরকে কোটি টাকায় কিনে হইচই ফেলে দিয়েছিল রাজস্থান রয়্যালস। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে নিজেকে জানান দিলেও তখনো খুব একটা পরিচিতি ছিল না বৈভব সূর্যবংশীর। নিলামের পর চুলছেঁড়া বিশ্লেষণ শুরু হয় বিহারের এই কিশোরকে নিয়ে। দলে নেওয়ার ব্যাখ্যায় রাজস্থান কোচ রাহুল দ্রাবিড় বলেছিলেন নেটে তার ব্যাটিং দেখে মনে ধরেছে। জহুরীর চোখ সোনা চিনতে ভুল করবে কেন! দ্রাবিড়ের কাছে বৈভব যেন মিস্ট্রি বক্ম। চলমান আইপিএলে বয়স আর অভিজ্ঞতার বিবেচনায় বৈভবকে না খেলানো নিয়েই গুঞ্জনটা বেশি ছিল। টুর্নামেন্টের মাঝপথে জাদুর বাক্মটা খুললেন দ্রাবিড়। লখনৌ পেসার শার্দুল ঠাকুরকে ছক্কা মেরে আইপিএল ক্যারিয়ার শুরু। নিজের অভিষেক ম্যাচে রান পেলেও অতটা বড় করতে পারেননি ইনিংস। সে কষ্টেই হয়তো চোখের জলে মাঠ ছেড়েছিলেন।
এবার আর ভুল হলো না। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা গুজরাটকে মাটিতে নামিয়ে আনলেন। হুইলচেয়ারে বসা দ্রাবিড়ও না দাঁড়িয়ে পারলেন না। ভারতের আগামী দিনের তারকাকে কুর্নিশ জানাল জয়পুরের গোটা গ্যালারি। মাত্র ৩৫ বলে সেঞ্চুরি কিংবা ১৪ বছর ৩২ দিনে আইপিএলে শতক হাঁকানো– আইপিএলে গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে বৈভব সূর্যবংশীর দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরির পর রেকর্ডবুকে আলোড়ন তুলেছে।ব্যাট করতে নেমে যেন কীর্তি গড়ার নেশায় পেয়ে গিয়েছিল বিহারের কিশোর এই ব্যাটারের। সবচেয়ে কম বয়সি ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলে শতরান করলেন। ১৭ বলে অর্ধশত রান করে আইপিএলে কনিষ্ঠতম হিসেবে কীর্তিও গড়লেন তার আগে। শেষ পর্যন্ত বৈভবের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৮ বলে ১০১ রান। ৭টি চার এবং ১১টি ছক্কা রয়েছে তার ইনিংসে।
বিধ্বংসী ইনিংসের পর সতীর্থ কিংবা প্রতিপক্ষ সবার প্রশংসায় ভাসছেন বৈভব। সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনন্দন জানাচ্ছেন ক্রিকেটের ‘ঈশ্বর’ শচীন টেন্ডুলকার। সবার প্রশংসার ভাসা বৈভব কী ভাবছেন? তার ভাষ্য, এসব তার রোজকার অভ্যাস।
ম্যাচ শেষে এক প্রতিক্রিয়ায় বৈভব বলেন, “এসব আমি প্রায়ই করি। অনূর্ধ্ব-১৯ দল বা ঘরোয়া ক্রিকেটে, আমি প্রথম বলে ছয় মেরেছি। প্রথম দশ বল খেলার সময় একেবারেই চাপ নিই না। যদি আমার সীমার মধ্যে বল আসে, তাহলে ছক্কা মারব।”
বৈভব সব কৃতিত্ব দিচ্ছেন তার মা-বাবাকে। বাবা সঞ্জীব ও মা আরতির আত্মত্যাগ ছাড়া আজকের বৈভব তৈরিই হতো না। তার বক্তব্য, “আমি আজ যেখানে, সেটা বাবা-মায়ের আশীর্বাদে। আমার মা রাত এগারোটার সময় ঘুমিয়ে তিনটার সময় উঠত, কারণ আমার প্র্যাকটিসের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। আমার বাবা কাজ ছেড়ে দিয়েছিল। বড় দাদা এখন সেসব সামলায়। কিন্তু একটা কথা আমি বিশ্বাস করি, পরিম শ্রকরলে ইশ্বর কখনও মুখ ফেরান না। আজ আমি যেটুকু অর্জন করেছি, সেটুকু আমার বাবা-মায়ের আশীর্বাদে।”