সাইফুল ইসলাম:
রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আদনান সাঈদ রাকিব (১৮) হত্যার বিচারের দাবিতে ধানমন্ডি এলাকার একটি সড়ক অবরোধ করেছে সহপাঠী ও শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার (১৭ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের সামনের সড়কে জড়ো হয়ে অবরোধ করে তারা। আইডিয়াল কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের অনুরোধে সন্ধ্যার দিকে অবরোধ কর্মসুচি স্থগিত করে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, গতকাল রোববার (১৬ জুলাই) রাত ১১টার দিকে ধানমন্ডির শেখ জামাল ক্লাবের ফুটপাতের সামনে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে রাকিব নিহত হয়। সে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল।
সড়কে অবস্থান নেওয়া রাকিবুল ইসলাম শামীম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, রাকিবের মতো আমরাও হত্যার শিকার হতে পারি। এ ঘটনায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি, আমরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে থাকতে চাই না। আমরা তার হত্যার বিচার চাই। সজিব নামের আরেকজন বলেন, আমার বন্ধুকে হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
নিহত রাকিবের বড় ভাই হৃদয় বলেন, গতকাল রোববার রাতে আমাদের বাসার উলটো পাশে ধানমন্ডি বয়েজ কলেজের রায়হান নামে এক বন্ধুর সঙ্গে চা খেতে যায় রাকিব। পরে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এতে ঘটনাস্থলে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়। তবে সেসময় আসলে কী ঘটেছিল সে ব্যাপারে আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। তিনি বলেন, আমরা গ্রিনরোডের স্টাফ কোয়ার্টারে থাকি। আমার বাবার নাম নূরনবী। তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেন। আমাদের বাড়ি ল²ীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা এলাকায়। আমাদের তিন ভাইয়ের মধ্যে রাকিব সবার ছোট ছিল।

এ ব্যাপারে ধানমন্ডি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পারভেজ ইসলাম বলেন, রাত ১১টার দিকে শেখ জামাল ক্লাবের আমবাগানের সামনের ফুটপাতে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে রাকিব গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ড পূর্ব শত্রæতার জেরে ঘটেছে কিনা তা আমরা এখনো নিশ্চিত নই।
ওসি বলেন, ঢামেক হাসপাতালের মর্গে গিয়ে দেখা যায়- আদনান সাঈদ রাকিবের ডান কাঁধে একটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ আঘাতের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে আজ সোমবার (১৭ জুলাই) বিকেল পৌনে ৩ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে আদনান সাঈদ রাকিবের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। পরে আইনি প্রক্রিয়ায় পরিবারের কাছে তার লাশ হস্তান্তর কওে পুলিশ।

নিহতের ভাই হৃদয় কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমরা প্রথমে আমার ভাইয়ের মরদেহ গ্রিন রোডের স্টাফ কোয়ার্টারে নিয়ে যাব। সেখান থেকে জানাজা শেষে আমার ভাইকে নোয়াখালীর রামগঞ্জ থানা এলাকায় আবারও জানাজা শেষে দাফন করা হবে। তিনি আরও বলেন, আমার ভাইকে যারা হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
ধানমন্ডি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বলেন, মরদেহটি ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। রাকিব হত্যায় জড়িত আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে বলেও জানান ধানমন্ডি থানার এসআই আলমগীর হোসেন।
প্রসঙ্গত, গতকাল রোববার (১৬ জুলাই) রাত ১১টার দিকে ধানমন্ডির শেখ জামাল ক্লাবের ফুটপাতের সামনে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে রাকিব নিহত হয়। সে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল।