ইইউ কাছ থেকে বিএনপি ‘ঘোড়ার ডিম’ ছাড়া কিছুই পায়নি: ওবায়দুল কাদের
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। সংসদের বিলুপ্তি হবে না। শেখ হাসিনাও পদত্যাগ করবেন না। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বিএনপির কথা শোনেনি, তাদের (ইইউ) কাছ থেকে বিএনপি ‘ঘোড়ার ডিম’ ছাড়া কিছুই পায়নি বললেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আজ মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনে আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রার আগে এক সমাবেশে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ফখরুল আজ কী বলেছেন? তাদের পদযাত্রা নাকি গণযাত্রা, বিজয়যাত্রা। আসলে তাদের পদযাত্রা পরাজয় যাত্রা। এটি তাদের পতনযাত্রা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কি তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছে? শেখ হাসিনার পদত্যাগ বা সরকারের পদত্যাগ দিয়েছে? বিএনপি কী পেয়েছে? তারা পেয়েছে হাসের ডিম আর ঘোড়ার ডিম। যুক্তরাষ্ট্রও এসেছে। কিন্তু তারাও বিএনপিকে দিয়ে গেল ঘোড়ার ডিম। তত্ত্বাবধায়ক হবে না। সংসদের বিলুপ্তি হবে না। অন্যান্য দেশের মতো শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দুনিয়ার অন্য কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই। আর বিএনপি কী মনে করেছে, তাদের কথায় শেখ হাসিনা সরে যাবে? আমরা আমেরিকানদের বলেছি, ইইউকে বলেছি, তত্ত্বাবধায়ক কেউ চায় না। বিএনপি যা চেয়েছে তা কোনোদিনও হবে না। তত্ত্বাবধায়ক আদালত বাতিল করেছেন, আমরা কিছুই করিনি।’
আমেরিকানরা এলো, চলে গেল; বিএনপিকে দিয়ে গেল ঘোড়ার ডিম। ইউরোপীয় ইউনিয়নও দিয়ে গেল ঘোড়ার ডিম, বলেন ওবায়দুল কাদেরবিএনপি আইন মানে না, আদালত মানে না জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের বিপক্ষে যা যায়, তারা তা কখনোই মানতে চায় না। সংবিধানে যা লেখা আছে, সেভাবেই নির্বাচন হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি যতই বিষেদগার আর মিথ্যাচার করুক না কেন- কোনো লাভ হবে না। আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বলেছে, আমরা নির্বাচনের আগে ও পরে শান্তি চাই। তত্ত্বাবধায়ক হবে না। তারা (বিএনপি) মনে করেছিল ২০০১ সালের মতো জিতে যাবে। সে আশায় গুড়েবালি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার মেরে ফেলেছি। আমরা করিনি। তত্ত্বাবধায়ক বাতিল করেছে উচ্চ আদালত। বিএনপি আদালত মানে না। বিচার পক্ষে না গেলে তা মানে না।
সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে বলে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, এর বাইরে এক চুলও আমরা নড়ব না। যতই মারামারি, হুমকি-ধমকি দেওয়া হোক না কেন- আওয়ামী লীগ কারও কাছে মাথা নত করে না।
আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির দুর্নীতি, লুটপাট, চুরি, হত্যার বিরুদ্ধে খেলা হবে।
বাংলাদেশে শয়তানের দলের আসল ঠিকানা বিএনপি। তাদের দফা নাকি একটা, আবার বলে ৩২টা। তাদের দফার ঠিক নেই, ঐক্যের ঠিক নেই। তারা বিদ্যুতের নামে খাম্বা দিয়েছে। এই সরকারের আমলে দেশের মানুষ শতভাগ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবকিছু সুন্দরভাবে সামাল দিচ্ছেন। কিন্তু বিএনপি ঘোড়ার ডিম ছাড়া কিছুই দিতে পারবে না। এই সরকার পদ্মা সেতু দিয়েছে, মেট্রোরেল দিয়েছে, একদিনে একশ’ সেতু উদ্বোধন করেছে। সামনের মাসে আরও কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন হবে। অক্টোবরে বঙ্গবন্ধু টানেল প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন।
এ সময় প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, ফখরুল, আপনি কী দেখিয়ে নির্বাচন করবেন?
তিনি বলেন, বিএনপি-ফখরুল বুঝে গেছেন, গতবারের মতো এবারও হারবেন। ফখরুল বলেছেন, আওয়ামী লীগ মাত্র ১০টা আসন পাবে। এখন বলছেন ৩০টা। তাকে ধন্যবাদ। তিনি আসন বাড়িয়েছেন। অথচ তারা এই কথা বলার পর ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই সংখ্যক আসন পেয়েছেন। তাদের আন্দোলন ভুয়া। আমাদের তরুণরা যেভাবে মিছিলে নেমেছেন, তাতে বিএনপির কোনো উপায় নেই। যেসব তরুণ প্রথমবার ভোটার হয়েছেন, তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে। বিএনপি নাকি ২০৩০ সালে ডিজিটাল দেশ করবে। এখন তারা আর এই কথা বলে না। তাদের এই কথাও ভুয়া।
আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, দয়া করে কারও সঙ্গে গোলমাল করবেন না। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা বিজয়ী হব, আমরা কেন গোলমাল করব? আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আমাদের কাজ করব। তারা গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে চাইবে। ভরা কলসি নড়ে না, খালি কলসি নড়ে।
শেখ হাসিনার কলসি উন্নয়নে ভরা কলসি। আমরা কেন নড়ব? আপনারাও নড়বেন না। কোনো ঝামেলা করবেন না। ঝামেলা দেখলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাবেন। আপনাদের অনুরোধ করছি, বিএনপির সঙ্গে কেউ ঝামেলায় জড়াবেন না। আমাদের সামনের কর্মসূচিতেও আপনারা ধৈর্যশীলতার পরিচয় দেবেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল কি দেখিয়ে ভোট চাইবেন, আপনাদের অন্তর্জালা এক দিনে ১০০ সেতু, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু। আরও অনেক মেগা প্রকল্প সামনে উদ্বোধন হবে। ফখরুল বলেন আওয়ামী লীগ ৩০টা আসন পাবে, আগে বলেছে ১০টা আসন পাবে। কয়েকটা আসন তিনি বাড়িয়েছেন।’
নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি গায়ে পড়ে ঝগড়া করবে। ভরা কলসি নড়ে না, নড়ে খালি কলসি। বিএনপির খালি কলসি, তাই নড়ে বেশি। আমাদের অর্জনের কলসি, তাই নড়ে না। লাঠিসোঁটার দরকার নাই, পাল্টাপাল্টির দরকার নাই। নিজেরা নিজেরা কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না। এটা আমার কথা না, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত।’
শোভাযাত্রায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম প্রমুখ।