তারেকের বক্তব্য প্রচার বন্ধে আবারও রুল শুনানির উদ্যোগ
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রিন্ট, ইলেকট্রিক ও অনলাইন গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার বন্ধের বিষয়ে জারি করা রুল শুনানির উদ্যোগ নিয়েছেন রিটকারী আইনজীবীরা। আজ বুধবার (২ আগস্ট) হাইকোর্টে সাবেক মন্ত্রী ও সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম এই আর্জি (ম্যানশন সিøপ) উপস্থাপন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম ও অ্যাডভোকেট নাসরিন সিদ্দিকী লিনা। বিষয়টি নিউজ পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন অ্যাডভোকেট নাসরিন সিদ্দিকী লিনা। এর আগে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ বিষয়ে আবেদন করা হয়।
এ বিষয়ে উপস্থাপন করা আবেদনটি হাইকোর্টের বিচারপতি খসরুজ্জামান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে কজলিস্টে (কার্যতালিকায়) এলে শুনানি হতে পারে। আইনের দৃষ্টিতে পলাতক থাকা অবস্থায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য বা বিবৃতি সব ধরনের গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ অন্তর্র্বতীকালীন এ আদেশ দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে তারেক রহমানের বিদেশে বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানাতে পররাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার পাসপোর্টের মেয়াদের বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) একটি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। রুলে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রকাশ ও প্রচার নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইন সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, বিটিভির মহাপরিচালক, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, একুশে টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক, দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও তারেক রহমানসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। ওই সময় বলা হয়, সম্প্রতি (তৎকালীন সময়ে ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি) দেশের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তারেক রহমানের দেওয়া বক্তব্য তুলে ধরে তা প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আইনজীবী নাসরিন সিদ্দিকী লিনার পক্ষে রিটটি করেন আইনজীবী সানজিদা খানম।
আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, অ্যাডভোকেট (মরহুম) সাহারা খাতুন, বর্তমান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, বর্তমান অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোমতাজ উদ্দিন মেহেদী, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায়।
ওই সময় সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট (বর্তমানে মন্ত্রী) শ ম রেজাউল করিম বলেছিলেন, আইনের দৃষ্টিতে পলাতক থাকা অবস্থায় তারেক রহমানের কোনো বক্তব্য-বিবৃতি প্রচার বা প্রকাশ নিষিদ্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ অনলাইনে তারেক রহমানের কোনো ধরনের বক্তব্য প্রচার করা যাবে না। তারই ধারাবাহিকতায় এটি আবার শুনানির উদ্যোগ নিলেন আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা।
শ ম রেজাউল করিম বলেছিলেন, তারেক রহমান তার বক্তব্যে বাংলাদেশের মীমাংসিত বিষয়কে বিতর্কিত করে দেশের ভেতর নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। যা সংবিধানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এ বক্তব্য প্রচার করা হলে তা কোনোভাবে কাক্সিক্ষত হবে না, দেশের জন্য মঙ্গল হবে না এবং আইনের পরিপন্থী হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে শ ম রেজাউল করিম বলেন, রিট আবেদনে তারেক রহমানকেও বিবাদী করা হয়েছে। তাই পরবর্তীতে তিনি চাইলে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারবেন। দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে অবস্থান করা তারেক রহমান ওই সময় আলোচনায় এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নানা ধরনের বক্তব্য দিয়ে। লন্ডনেই তিনি তার পিতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি দাবি করেছিলেন।
কয়েকটি সভায় দেওয়া বক্তব্যের জন্য বাংলাদেশে অনেকগুলো মামলাও হয়েছে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে। গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে আদালত থেকে। সবশেষ ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি তারেক রহমানের একটি বক্তব্য বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রচার হয়। যাতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন অব্যাহত রাখার কথা বলেছিলেন। এসব বিষয় তুলে ধরে ওই সময় রিট করা হয় হাইকোর্টে।