উপাচার্যের বাসভবনের সামনে কুয়েত-মৈত্রীর ছাত্রীদের অবস্থান
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
ঢাবি প্রতিবেদক:
তিনশো শিক্ষার্থীকে অন্য হলে স্থানান্তরসহ তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুর ১টা থেকে এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা সিটের দাবিতে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান করেন তারা। তবে দুপুরের পর মুষলধারে বৃষ্টির ঝড়ায় অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়ায় ছাত্রীরা।
এদিকে অবস্থান কর্মসূচি শুরুর পর দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন আবাসিক শিক্ষক মনিরা পারভীন ও সহকারী প্রক্টর সঞ্চিতা গুহ। কিন্তু শিক্ষার্থীরা দাবি না আদায় পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন। পরবর্তীতে বেলা তিনটার কিছু আগে তিনজনের একটি প্রতিনিধিদল হলের প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করতে যান।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের হলে আবাসন সমস্যা, বাসের সংকট, খাবারের মান খারাপ, ওয়াশরুম সমস্যাসহ অনেক সমস্যা রয়েছে। আমরা শুধু চাই ৩০০ শিক্ষার্থীকে অন্যান্য হলে স্থানান্তরিত করা হোক। প্রতি বছর প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষার্থীকে হলে আসন দেয়া হয়। কিন্তু আমাদের সর্বোচ্চ সাড়ে পাঁচশত আসন রয়েছে।
একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুয়েত মৈত্রী হলের মূল ভবনে বৈধ আসনের কক্ষের সংখ্যা ৮৯টি৷ ৫৭টি কক্ষে বর্তমানে সাতজন করে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাকি ৩১টি কক্ষে ছয়জন করে শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন। একইসঙ্গে মূল ভবনে এক কক্ষে সাতজন করে শিক্ষার্থী বরাদ্দ দেওয়ায় সেখানে বসবাসের অযোগ্য পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা আবাসন সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু কোনও কাজ হচ্ছিল না। বাধ্য হয়ে আজকে রাস্তায় নামতে হয়েছে। এখানে সবার আর্থিক অবস্থা ভালো না, এমনকি আমাদের অধিকাংশের ঢাকায় আত্মীয়র বাসাও নেই। তাই আমাদের বাধ্য হয়ে হলে থাকতে হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, অন্য হলের মেয়েরা যেখানে প্রথম ছয় মাসেই সিট পেয়ে যাচ্ছে সেখানে চতুর্থ বর্ষে এসেও এই হলে মেয়েরা সিট পাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অসংখ্যবার এসব সমস্যার কথা জানানো হলেও তারা শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন।
শিক্ষার্থীদের তিন দাবি হচ্ছে- বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল থেকে অন্তত ৩০০ শিক্ষার্থীকে অন্য হলে এক মাসের মধ্যে স্থানান্তরের মাধ্যমে বৈধ আসন নিশ্চিত করা; পরবর্তীতে হলের আসনসংখ্যার সঙ্গে সমন্বয় রেখে নতুন শিক্ষার্থী অ্যালটমেন্ট দেওয়া; হলের সার্বিক সংকট বিবেচনায় মূল ভবনের প্রতি কক্ষে ৬ জনের বেশি শিক্ষার্থী বরাদ্দ দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট না করা।
এ বিষয়ে মৈত্রী হলের হাউজ টিউটর মনিরা পারভীন বলেন, অনেক শিক্ষার্থী প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসে। এর ফলে তাদের বাইরে থাকার জায়গা না থাকায় গণরুমেই থেকে যায়। আমরাও জানি সেখানে থাকা সম্ভব না। কিন্তু, আমাদের বাধ্য হয়ে সেটা মেনে নিতে হয়। এছাড়া প্রতি রুমে ৬ জনের জায়গায় ৭ জন করে দিয়েছি তবুও জায়গা হচ্ছে না। নতুন ভবন নির্মাণের কথা প্রশাসনকে জানিয়েছি। আর সেটা না হলে যেন কম শিক্ষার্থী বরাদ্দ দেওয়া হয়।