ডিজিটাল সুবিধা নিয়ে জঙ্গিরাও সচেতন হওয়ার চেষ্টা করছে: ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশিত: ৯:০২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৭, ২০২৩

এসএম দেলোয়ার হোসেন:
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, দেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হওয়ার ফলে অপরাধীরাও ডিজিটাল সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে। ডিজিটাল সুবিধা নিয়ে জঙ্গিরাও সচেতন হওয়ার চেষ্টা করছে। জঙ্গিরা এখন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না। ডিজিটাল সুবিধা নিয়ে তারা মোবাইলের বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) রাজধানীর সবুজবাগে ‘স্বস্তি’ প্রকল্পের আওতায় স্থাপিত ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, হলি আর্টিসান হামলাসহ সারাদেশে জঙ্গিদের ভয়াবহ তাণ্ডব শুরু হয়েছিল। দেশি-বিদেশি চক্রান্তে জঙ্গিদের এই উত্থানের মূল কারণ ছিল বাংলাদেশের উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়া। আপনাদের সবার সহযোগিতায় বাংলাদেশ পুলিশ জঙ্গি দমন ও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। কিন্তু জঙ্গি বাংলাদেশ থেকে এখনো পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। কিছুদিন আগেও দেখেছেন ডিএমপির সিটিটিসি সিলেটের গভীর অরণ্য থেকে আবার নতুন জঙ্গিদের গ্রেফতার করেছে।
ডিএমপি প্রধান বলেন, একটি দেশের উন্নয়নের পূর্বশর্ত স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত (২০১২-১৩ অগ্নিসন্ত্রাস বাদে) আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ফলে প্রধানমন্ত্রীর যে উন্নয়ন পরিকল্পনা সেগুলো বাস্তবায়নে কোনো প্রকার বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে না। সারা বাংলাদেশে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে।
খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, দেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হওয়ার ফলে অপরাধীরাও ডিজিটাল সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে। ডিজিটাল সুবিধা নিয়ে জঙ্গিরাও সচেতন হওয়ার চেষ্টা করছে। জঙ্গিরা এখন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না। ডিজিটাল সুবিধা নিয়ে তারা মোবাইলের বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করছে। তবে পুলিশ তাদের থেকে পিছিয়ে থাকতে পারে না। অপরাধীরা ডালে ডালে চললে আমাদের পাতায় পাতায় চলতে হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট আজকের এ দিনে সারাদেশের ৬৩ জেলায় জঙ্গিরা বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। আনুষ্ঠানিকভাবে জঙ্গিরা জানান দিয়েছিল বাংলাদেশ একটি জঙ্গিরাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। যারা তখন ক্ষমতায় ছিলেন আমি বলবো তাদের মদতে বাংলাদেশ জঙ্গিরাষ্ট্রে পরিণত হতে যাচ্ছিল। বাংলাদেশ পুলিশ ও জনগণ জঙ্গিরাষ্ট্র হওয়া থেকে এখন পর্যন্ত দেশকে রক্ষা করে চলেছে।

খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ইস্যুতে একটি মহল দেশজুড়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এ বছর নির্বাচনী মাঠ ঘোলা করার জন্য অনেকেই মাঠে নামবে, অনেকেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করার চেষ্টা করবে এবং নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে চাইবে। জাতীয় নির্বাচনে কেউ বাধা দিলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর হস্তে তা দমন করবে পুলিশ।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকা মহানগরীতে প্রায় দুই কোটি লোকের বসবাস। বিদেশি সংস্থাসহ রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সংসদ, সচিবালয়সহ বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা দেওয়া হয়। এটি আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি এটি নির্বাচনী বছরও। নির্বাচন ঘিরে কেউ আইনশৃঙ্খলার অবনতি করার চেষ্টা করলে বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের সহযোগিতা নিয়ে কঠোর হস্তে তা দমন করবে। তিনি বলেন, তিন-চারদিন আগেই দেখলেন জামায়াতের একজন শীর্ষ নেতার (দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী) হার্ট অ্যাটাকে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তার মরদেহ নিয়ে একটি মহল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঘোলা করার চেষ্টা করছিল। তাতে তারা সফল হয়নি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত সাবের হোসেন চৌধুরী।