নিজ্জার হত্যায় ভারতের জড়িত থাকার প্রমাণ কানাডার কাছে আছে

প্রকাশিত: ৪:৫৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারের হত্যার ঘটনায় মাসব্যাপী তদন্তের পর ব্যাপক প্রমাণ সংগ্রহ করেছে কানাডিয়ান সরকার। আর এই প্রমাণের জেরেই দিল্লির সঙ্গে অটোয়ার সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। সংশ্লিষ্ট কিছু সূত্রের বরাতে এ খবর ছেপেছে কানাডার শীর্ষ সংবাদমাধ্যম সিবিসি নিউজ।

কানাডার সরকারি সূত্র বলছে, কানাডায় উপস্থিত ভারতীয় কূটনীতিকসহ দেশটির আরও কয়েকজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।

এই গোয়েন্দা তথ্য কেবল কানাডা থেকে আসেনি। কিছু এসেছে ফাইভ আইজ গোয়েন্দা জোটের কাছ থেকেও। ফাইভ আইজ হলো অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে গঠিত একটি গোয়েন্দা জোট।

শিখ নেতা নিজ্জারকে ১৮ জুন একটি শিখ মন্দিরের বাইরে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি যে জীবনের ঝুঁকিতে ছিলেন কানাডিয়ান সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস সে বিষয়ে তাকে আগেই সতর্ক করেছিল।
হরদীপ সিং নিজ্জারের মৃত্যুর তদন্তে সহযোগিতা চেয়ে কানাডার জাতীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা উপদেষ্টা জোডি থমাস আগস্টের মাঝামাঝি চারদিনের সফরে ভারত ছিলেন। চলতি মাসেও পাঁচ দিনের জন্য তিনি ভারত যান। শেষ সফরটি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে একটি উত্তেজনাপূর্ণ বৈঠকের সময় হয়েছিল।

 

কানাডার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ ভারতের

বিরোধটি ভারতের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ককে বিষিয়ে তুলেছে। ভারত একটি ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক শক্তি। যুক্তরাষ্ট্র দেশটিকে সম্ভাব্য মিত্র হিসেবে বিবেচনা করছে।

ভারত সরকারের দাবি, নিজ্জারসহ শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় দিয়েছে কানাডা। এসব বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সন্ত্রাসী বলে দাবি করছে দিল্লি।
ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্বের জেরে ইতোমধ্যেই কানাডা এবং ভারত উভয়ের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে। শুধু তাই নয়, ভারত বৃহস্পতিবার কানাডায় ভিজিটর ভিসা প্রক্রিয়াকরণ বন্ধ করে দিলে উত্তেজনা তুঙ্গে ওঠে।
অটোয়াতে সরকারি সূত্র বলছে, ভারতের এমন পদক্ষেপের উপযুক্ত জবাব খুঁজছে কানাডা সরকার। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি তা এড়িয়ে যান।

 

‘এ ধরনের কর্মকাণ্ডে’ মিত্রদের কোনও ছাড় নেই: যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন সরকার নিশ্চিত বা অস্বীকার করেনি যে ফাইভ আই থেকে তারা তথ্য পেয়েছে। তবে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান নিশ্চিত করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র এই বিষয়ে কানাডা সরকারের সঙ্গে ঘন ঘন যোগাযোগ করছে। তিনি জানান, ভারত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

সুলিভান বলেন, এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তদন্তের পর অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি দেখতে চায় ওয়াশিংটন।

অবশ্য এ ক্ষেত্রে মার্কিন স্বার্থের বিষয়টিও জড়িত। কারণ শক্তিশালী গণতন্ত্রের দেশ ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চায় যুক্তরাষ্ট্র।
দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমস বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং অন্যান্য ফাইভ আইস সদস্যরা সাম্প্রতিক জি-২০ সম্মেলনের সময় সরাসরি মোদির সামনে হত্যার বিষয়টি উত্থাপন করেন। প্রতিবেদনে আলোচনার সঙ্গে জড়িত তিনটি সূত্র উদ্ধৃত করা হয়।

কানাডা সরকার মামলায় মোদির জড়িত থাকার বিষয়ে আলোচনা করতে অস্বীকার করেছে। ভারত সরকারও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

সূত্র: সিবিসি নিউজ