সেলিনা আক্তার:
রেলের আয় বাড়াতে ও মালামাল পরিবহনের সুবিধার্থে ট্রেনে আজ থেকে যুক্ত হয়েছে লাগেজ ভ্যান। প্রথম লাগেজ ভ্যান যুক্ত করে ঢাকা ছেড়ে যায় ঢাকা-সিলেট-ঢাকা রুটের জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেন। আজ রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যাওয়ার সময় জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনে নতুন নন-রেফ্রিজারেটর লাগেজ ভ্যানে ৪ হাজার ৬০০ কেজি মালামাল বুকিং নেওয়া হয়। যাত্রীবাহী এই ট্রেনে এ মালামাল পরিবহন বাবদ রেলওয়ের আয় হয়েছে ১০ হাজার ২১২ টাকা। এই পথে কেজিপ্রতি পরিবহন খরচ ২ টাকা ২২ পয়সা ধরা হয়েছে। এভাবে ১৬টি ট্রেনে নতুন লাগেজ ভ্যান যুক্ত হবে। এর আগে এদিন রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন লাগেজ ভ্যান যুক্ত কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এবং সবুজ পতাকা নেড়ে ট্রেন ছাড়ার অনুমতি দেন।
এসময় নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিবহন বিভাগের চাহিদার ভিত্তিতে সবুজ শাকসবজি, মৌসুমি ফল, ফুল, অনান্য পচনশীল দ্রব্য (মাছ, মাংস, দুধ), ওষুধ ও ভ্যাকসিন রেলযোগে পরিবহনের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে লাগেজ ভ্যান ক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করে। দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার লক্ষ্যে ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ১২৫টি লাগেজ ভ্যানসহ (৭৫টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ) আরও অন্যান্য রোলিং স্টক (৪০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ, ৫৮০টি মিটারগেজ ওয়াগন ও ৪২০টি ব্রডগেজ ওয়াগন) সংগ্রহের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) ২০১৮ সালের ২৬ জুন অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে অনুমোদিত হয়। পরে ওই বছরের জুলাই মাসে ৭৫টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যান সংগ্রহের জন্য দুটি দরপত্র আহবান করা হয় এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে ও চীনের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান JV o CNTIC-RAILTECO-JINXI এর সঙ্গে ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট পৃথক দুটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। মোট চুক্তিমূল্য ৩৫৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। ৭৫টি মিটারগেজ লাগেজ ভ্যানের চুক্তিমূল্য ১৮৩ কোটি ২৪ লাখ এবং ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যানের চুক্তি মূল্য ১৭৫ কোটি ১৫ লাখ।
তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য বিভাগীয় ও জেলা শহরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলসমূহের সঙ্গে নির্ধারিত আন্তঃনগর ট্রেনে লাগেজ ভ্যান যুক্ত করা হবে। এর মাধ্যমে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত দ্রব্যাদি সহজে বাজারজাত করতে পারবেন এবং আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। অপরদিকে ব্যবসায়ীরা দেশের শহরগুলোতে কৃষিজাত পণ্যসমূহ সহজে সরবরাহ করতে পারবেন। ফলে দ্রব্যাদি সহজলভ্য হবে এবং ন্যায্যমূল্যে পাওয়া যাবে। এ ট্রেন চালু হলে রেলওয়ের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে, যা সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
কৃষিপণ্য পরিবহনের বিষয়ে কৃষকদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলেছি। আমরা আড়তদার ও বড় বড় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছি। যেহেতু আমরা এটা মাত্র শুরু করলাম, তাই ভবিষ্যতে এটাকে বহুমুখী করার জন্য অন্যান্য পরিবহনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আসতে হবে। আমরা এজেন্ট নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা রেল নিয়ে কোনো ব্যবসা করতে চাই না। আমরা ফ্যাসিলিটিসটা দিতে চাই। আমরা আপাতত ১৬টি ট্রেনে একটি করে লাগেজ ভ্যান দিচ্ছি। চাহিদার ওপর নির্ভর করে আমরা লাগেজ ভ্যান বাড়াবো।