ভারতের চার শহরে ১১ জনের দেহে করোনাভাইরাসের লক্ষণ শনাক্ত করা গেছে। তাদেরকে হাসপাতালের সম্পূর্ণ আলাদা ওয়ার্ডে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সম্প্রতি ওই ব্যক্তিরা চীন থেকে দেশে ফিরেছেন।
তবে ওই ব্যক্তিদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সামান্য লক্ষণ দেখা গেছে বলে জানানো হয়েছে। এদের মধ্যে সাতজন কেরালার, দু’জন মুম্বাইয়ের এবং একজন বেঙ্গালুরু ও একজন হায়দরাবাদের বাসিন্দা।
গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে হুবেই প্রদেশের রাজধানী শহর উহানে প্রথম ফ্লু টাইপের এই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। ওই শহরের পর ভাইরাসটি রাজধানী বেইজিংসহ অন্যান্য প্রদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া চীনের প্রতিবেশী জাপান, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, ম্যাকাও এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াতেও এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
এখন ইউরোপে এবং এশিয়াতেও ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস। অপরদিকে ফ্রান্সে তিনজনের এই ভাইরাসে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। শুক্রবার রাতে ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বোরডেক্সে প্রথম একজন এবং প্যারিসে দু’জনের এই ভাইরাসে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
চীনে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত এক হাজার ২৮৭ জন আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৪১ জনই মারা গেছেন। কেরালার করোনাভাইরাসবিষয়ক যোগাযোগ ইন-চার্জ ড. অমর ফেটল বলেন, চীন থেকে আসা সাতজনের দেহে করোনাভাইরাসের সামান্য লক্ষণ দেখা গেছে। শুক্রবার তাদের আলাদা ওয়ার্ডে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
ভারতের বিভিন্ন বিমানবন্দরে চীন এবং হংকং থেকে দেশে ফিরে আসা ২০ হাজারের বেশি যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কেরালায় ৮০ জনকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭৩ জনের দেহে এই ভাইরাসের কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি।
কিন্তু বাকি সাতজনের জ্বর এবং কাশিসহ এই ভাইরাসের সামান্য লক্ষণ দেখা গেছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং চিকিৎসকদের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও পরামর্শে রাখা হয়েছে।
দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অব মেডিকেল সাইন্স (এইমস) ইতোমধ্যেই একটি আলাদা ওয়ার্ড প্রস্তুত করে রেখেছে। নতুন এই ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় সেখানে আলাদা শয্যা প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।
এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলো হলো জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে এই ভাইরাসের কারণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ এই ভাইরাস অনেকটাই সেভার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম বা সার্সের মতো। ২০০২ এবং ২০০৩ সালে সার্সের কারণে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।