ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মা-সন্তানসহ ৩ জনকে গলাকেটে হত্যা, খাটে বসে ছিল ৯ মাসের শিশু

প্রকাশিত: ৬:৩৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৭, ২০২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে মা ও দুই সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় অক্ষত প্রাণে বেঁচে গেছে নয় মাসের শিশুসন্তান অজিহা। শিশুটিকে রক্তাক্ত লাশের পাশে খাটের ওপর বসা অবস্থায় পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সকালে উপজেলার আইয়ুবপুর ইউনিয়নের চর ছয়ানী এলাকায় নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

এ সময় খাটের ওপর থেকে অক্ষত অবস্থায় বসে থাকা শিশু অজিহাকে উদ্ধার করে তার চাচিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ নিহতদের লাশ মর্গে পাঠিয়েছে। তবে কে বা কারা তাদের কী কারণে হত্যা করেছে, তা এখনও অস্পষ্ট। ঘটনার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করেছে। নিহতরা হলেন আইয়ুবপুর ইউনিয়নের চর ছয়ানী এলাকার সৌদি প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রী জেকি আক্তার (৩৫), তার বড় ছেলে মাহিন (১৪) ও ছোট ছেলে মহিন (৭)। আজ মঙ্গলবার বিকেলে নিউজ পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, জেকি আক্তার তার দুই ছেলে ও নয় মাস বয়সী কন্যাশিশুকে নিয়ে নিজ বাড়িতেই ছিলেন। জেকির স্বামী শাহ আলম সৌদি আরবে রয়েছেন। আজ সকাল ৯টার দিকে বাড়ির কাজের লোক এসে দেখেন বিল্ডিংয়ের গেট লাগানো। অনেক ডাকাডাকি করলেও গেট খুলছিল না। পরে বাড়ির অন্য লোকজনকে নিয়ে চেষ্টা করে গেট খুলে সবাই ভেতরে ঢোকেন। ভেতরে গিয়ে দেখেন ঘরের মেঝেতে শাহ আলমের স্ত্রী জেকি ও তার বড় সন্তান মাহিনের গলাকাটা মরদেহ পড়ে আছে। অন্যদিকে পাশের একটি বাথরুমে ছোট ছেলে মহিনের গলাকাটা মরদেহ পড়ে ছিল।
সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনজনকে হত্যাকারীরা হত্যা করলেও শাহ আলমের শিশুকন্যা অজিহা অক্ষত থেকে যায়। তাকে বিছানার ওপরে অক্ষত অবস্থায় পেয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। তারা অজিহাকে উদ্ধার করে তার চাচিদের কাছে রেখেছেন।
তিনি আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক টিম ঘটনার রহস্য উদঘাটনে ঘটনাস্থলে কাজ শুরু করেছে। এখনো সন্দেহজনকভাবে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, প্রাথমিকভাবে বিষয়টি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে। কোনো চুরি ডাকাতি করার জন্য এ ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে না। তারপরও কোনো বিষয় আমরা বাদ দিচ্ছি না। সব বিষয় মাথায় রেখেই তদন্ত চলছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।