নিজস্ব প্রতিবেদক:
আজ রোববার শারদীয় দুর্গাপূজার মহাষ্টমী উদযাপন করবে হিন্দু সম্প্রদায়। মহাষ্টমীতে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজার বিশেষ পর্ব ‘কুমারী পূজা’। রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থান এবং সারাদেশে আজ পূজামণ্ডপগুলোতে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
দেবী দুর্গার কুমারী রূপের নাম ‘উমা’। সনাতন শাস্ত্রমতে, মাতৃভাবে কুমারীকন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা কল্পনা করে জগৎমাতার উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদনই কুমারী পূজা। এ পূজার মাধ্যমে নারী হয়ে উঠবে পবিত্র ও মাতৃভাবাপন্ন। প্রত্যেকে নারীর প্রতি হবে শ্রদ্ধাশীল।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, কুমারী কন্যার পূজা একাধারে সৃষ্টিকর্তার উপাসনা, মানবের বন্দনা আর পৃথিবীতে নারীর মর্যাদার প্রতিষ্ঠা। নারীর সম্মান, মানুষের সম্মান আর সৃষ্টিকর্তার আরাধনাই কুমারী পূজার অন্তর্নিহিত শিক্ষা।
শারদীয় দুর্গোৎসবের তৃতীয় দিন আজ রোববার রাজধানীসহ সারাদেশে পূজামণ্ডপগুলোতে যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে পূজা-অর্চনা করবেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। গতকাল শনিবার ছিল মহাসপ্তমী। ওইদিন ভক্তরা দেবীর দিনভর পূজামণ্ডপগুলোতে আনন্দে মাতে।
জানা গেছে, মহাষ্টমীতে রোববার সকাল ৯টা থেকে শুরু হবে কুমারী পূজা। পূজার চারদিনের মধ্যে মহাষ্টমীর অঞ্জলি ও কুমারী পূজা সর্বাধিক তাৎপর্যপূর্ণ। মহাষ্টমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৬টা ১০ মিনিটে এবং সকাল ৯টায় শুরু হবে কুমারী পূজা। এদিন কুমারী রূপে দেবী দুর্গার আরাধনা করবেন পুণ্যার্থীরা। ১৬টি উপকরণ দিয়ে মহাষ্টমী পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এরপর অগ্নি, জল, বস্ত্র, পুষ্প ও বাতাস—এই পাঁচ উপকরণে দেওয়া হয় ‘কুমারী’ মায়ের পূজা। অর্ঘ্য প্রদানের পর দেবীর গলায় পরানো হবে পুষ্পমাল্য। কুমারী পূজা শেষে ভক্তরা মহাষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি দেবেন।
জানা যায়, ১৯০১ সালে ধর্মপ্রচারক স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার বেলুড় মঠে কুমারী পূজার মাধ্যমে এর প্রচলন করেন। তখন থেকে প্রতিবছর দুর্গাপূজার অষ্টমী তিথিতে এ পূজা চলে আসছে। পূজার আগ পর্যন্ত কুমারীর পরিচয় গোপন রাখা হয়। এছাড়া নির্বাচিত কুমারী পরবর্তী সময়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন আচার-অনুষ্ঠান করতে পারে। শাস্ত্র অনুসারে, সাধারণত ১ থেকে ১৬ বছরের সুলক্ষণা কুমারীকে পূজা করা হয়।
কুমারী পূজা ছাড়াও আজ মহাষ্টমীতে রাজধানীর শাঁখারী বাজার, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রমনা কালী মন্দিরসহ সারাদেশে বিভিন্ন মন্দিরে বেলা একটা থেকে দিনভর ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হবে। মন্দির ও মণ্ডপগুলোতেও পূজা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করা হবে।