নিজস্ব প্রতিবেদক:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কথিত উপদেষ্টা মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফীকে (মিয়া আরাফী) কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার (৩০ অক্টোবর) তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) সুজানুর ইসলাম।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দারের আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গতকাল রোববার (২৯ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর পল্টন থানায় তার বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলাটি করেন মহিউদ্দিন শিকদার নামে গোপালগঞ্জের একজন বাসিন্দা। মামলায় আরেফী ছাড়াও বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন এবং অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল হাসান সোরাওয়ার্দীকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত শনিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষোভ থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ কর্মীরা কাকরাইল মোড় থেকে আরামবাগ পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবন, সরকারি স্থাপনা ও সরকারি গাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করে। সংঘর্ষের ফলে পুলিশের ৪১ জন আহত ও একজন সদস্য নিহত হন। একপর্যায়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বিকেল ৩টার দিকে মহাসমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কথিত সেই উপদেষ্টা মিয়া আরাফী

বিএনপির এই কর্মকাণ্ডের পরবর্তী সময়ে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গত শনিবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যমের সামনে উপস্থিত হন। তখন এক নম্বর আসামি মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফী ওরফে মিয়া আরাফী নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা হিসেবে পরিচয় দেন। এ নিয়ে জনমনে নানান প্রশ্ন উঠে। এমন ঘটনায় ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস কর্তৃপক্ষ ও দেশের সাধারণ জনগণসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। এরপর ঘটনার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক টিম। ঘটনার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঝামেলা এড়াতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয়দানকারী মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফী ওরফে মিয়া আরাফী আত্মগোপনে চলে যান।

ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই তাকে ধরতে অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এরমধ্যেই তিনি পরিস্থিতি টের পেয়ে বাংলাদেশ ত্যাগের চেষ্টা চালান।

তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে ডিবি কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করে।