ডেস্ক রিপোর্ট :
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে নিশ্চিহ্ন করে অনির্দিষ্টকালের জন্য গাজা উপত্যকায় নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে চায় ইসরায়েল। সোমবার (৬ নভেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গাজায় আক্রমণ শুরুর পর থেকে অভিযান শেষে গাজায় ইসরায়েলি পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি। মঙ্গলবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এই খবর জানিয়েছে।
সাক্ষাৎকারে, চলমান যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর গাজা কে শাসন করবে—এমন প্রশ্ন করা হলে নেতানিয়াহু বলেন, আমি বিশ্বাস করি নিরাপত্তার স্বার্থে ইসরায়েল ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য’ গাজা শাসন করতে পারে।
এবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু আরও বলেন, ‘যখন আমাদের কাছে নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকে না, তখন আমরা হামাসের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের এমন বিস্তৃতি দেখি যা, আমরা কল্পনাও করতে পারি না।
গত মাসে পুরোপুরি গাজা দখলের বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে সতর্ক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এমন চেষ্টা করা একটি ‘বড় ভুল’ হবে বলে সতর্ক করার এক মাস পরই এমন মন্তব্য করলেন নেতানিয়াহু।
তবে হামাসের বিরুদ্ধে নেতানিয়াহুর আগ্রাসনকে বাইডেন দৃঢ়ভাবে সমর্থন করলেও, প্রকাশ্যে বেসামরিক হতাহতের ঘটনা রোধ করার প্রচেষ্টা এবং মানবিক সহায়তা প্রদানে বিরতির প্রয়োজনীয়তার মতো বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করছেন বাইডেন।
যুদ্ধবিরতির বিষয়ে নেতানিয়াহুর বক্তব্য হলো, হামাস গাজায় ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির কথা বিবেচনায় নেবে না তারা। তবে জনগণের চলাচল ও সহায়তা প্রবেশের অনুমতির জন্য ‘কৌশলগত অল্প সময় বিরতি’ দেওয়া যেতে পারে—এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
সোমবার নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের জিম্মিদের মুক্তি ছাড়া গাজায় কোনও যুদ্ধবিরতি, সাধারণ যুদ্ধবিরতি হবে না। যতদূর কৌশলগত সামান্য বিরতি যেমন, এখানে এক ঘণ্টা, সেখানে এক ঘণ্টা-এমনটি আমরা আগেও করেছি।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি পণ্য, মানবিক পণ্য প্রবেশ বা আমাদের জিম্মি, বিদেশি জিম্মিদের চলে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি আমরা বিবেচনা করব। তবে সাধারণ যুদ্ধবিরতি হবে বলে আমার মনে হয় না।’
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর হামাসকে নিশ্চিহ্ন করা লক্ষ্যে গাজায় বিমান হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। সম্প্রতি গাজা শহরের কাছাকাছি পৌঁছে গেলে স্থল অভিযানে থাকা ইসরায়েলি সেনারা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবা পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। ইসরায়েলের দাবি, হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হয়েছে। জিম্মি করা হয় ২৫০ জনকে গাজায় নিয়ে গেছে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা।