কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
টয়লেটের সামনে থেকে সরে দাঁড়াতে দেরি হওয়ায় তাসলিমা খাতুন (২৫) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে শ্বশুর-শাশুড়ি ও দেবরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ তার লাশ মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিহত গৃহবধূর তাসলিমার সৎ শাশুড়ি সালেহা খাতুনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ শনিবার (১৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নির্মম এ ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলা সদর ইউনিয়নের বদরপুর এলাকায়।
নিহত গৃহবধূ তাসমিলা খাতুন জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার মৌলভীরচর এলাকার মৃত আব্দুস সালামের মেয়ে। অভিযুক্তরা হলেন- শ্বশুর রহিজল হক (৫০), সৎ শাশুড়ি সালেহা খাতুন (৪৫) ও দেবর সানোয়ার হোসেন (২০)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুকুল হোসেনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তাসমিলা খাতুনের। বিয়ের ১০ বছর হলেও সন্তান আসেনি তাদের ঘরে। এ নিয়ে বিয়ের পর থেকে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
স্থানীয়রা নিউজ পোস্টকে আরও জানান, আজ শনিবার সকালে ওই গৃহবধূ টয়লেটের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় তার দেবর সানোয়ার হোসেন টয়লেটে যাবেন বলে সরে দাঁড়াতে বলেন। সরে দাঁড়াতে একটু দেরি হলে তার সৎ শাশুড়ি সালেহা খাতুন গিয়ে তাসলিমাকে লাথি মেরে মারধর করতে থাকেন। এ সময় শ্বশুর রহিজল হক তাকে আরও মারধর করতে বলেন। একপর্যায়ে শ্বশুর, শাশুড়ি ও দেবর মিলে তাসলিমাকে পেটাতে থাকেন। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। স্থানীয়রা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক সামিউল ইসলাম নিউজ পোস্টকে বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই গৃহবধূকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখমের দাগ আছে।
আজ রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাজিবপুর থানায় যোগাযোগ করা হলে পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) আতাউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে নিউজ পোস্টকে বলেন, গৃহবধূ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। অভিযুক্ত অন্যান্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।