প্রতীক বরাদ্দের পর আচরণবিধি প্রয়োগ, এর আগে নয়: সিইসি
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
নির্বাচনে প্রার্থিতা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত আচরণবিধি প্রয়োগের কোনও বিষয় নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, ‘রিটার্নিং অফিসার যোগ্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার পর প্রতীক বরাদ্দ দেবেন। তারপর আচরণবিধি প্রয়োগের সময় আসবে। এর আগে যদি কোনও রাজনৈতিক দল লাঙ্গল, নৌকা বা পাখি নিয়ে প্রচারণা করে তাতে কোনও রকম বাধা নেই।’
রবিবার (২৬ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘২০০৮ সালের আচরণবিধির বিষয় হচ্ছে প্রার্থীর ক্ষেত্রে। মনোনীত প্রার্থী বা সম্ভাব্য প্রার্থী এরা কেউ প্রার্থী নয়। প্রার্থী হচ্ছেন যিনি চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দাখিল করার পরে যোগ্য প্রার্থী হওয়ার পর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। সেদিন থেকে নির্বাচনি প্রচারণার সুযোগটা তাদের দেওয়া হবে। এর আগে যেটা হচ্ছে সেটা আমাদের জন্য নির্বাচনি প্রচারণা নয়। এখন যদি কোনও রাজনৈতিক দল লাঙ্গল নিয়ে, নৌকা নিয়ে বা পাখি নিয়ে প্রচারণা করে, তাতে কোনও রকম বাধা নেই।’
চূড়ান্তভাবে যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশন নিয়ন্ত্রণ করবে উল্লেখ করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তখনই হবেন, যখন রিটার্নিং অফিসার তাদের যোগ্য হিসেবে তালিকা প্রকাশ করবেন। তখন আমরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করবো। দেখবো তারা নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে কিনা? করলে আমরা তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবো।’
প্রধানমন্ত্রীর মিটিং প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মিটিং করলে তাতে অসুবিধা কোথায়? কারণ, আচরণবিধি প্রয়োগের সময় তো এখনও আসেনি। প্রধানমন্ত্রী কোথায় মিটিং করছেনৃ প্রধানমন্ত্রী কোনও প্রার্থী নন। হয়তো বা উনি সম্ভাব্য প্রার্থী হতে পারেন। রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক চূড়ান্তভাবে গৃহীত হওয়ার পর উনি প্রার্থী হবেন। তখন কোনও প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন করা যাবে না।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শোডাউন করে নমিনেশন নেওয়া হচ্ছে— আমাদের কোনও আইনেই বলা নেই যে, দলীয় ফরম কেনার সময় তারা শোডাউন করতে পারবে না, গাড়ি-ঘোড়া নিয়ে যেতে পারবেন না, দলবদ্ধভাবে যেতে পারবেন না। এটা বলা নেই। এখনও নির্বাচন আচরণবিধিমালা প্রযোজ্য হয়নি। আমাদের শোডাউনের ক্ষেত্রে যেটা বলা আছে তা হলো— যখন মনোনয়নপত্র দাখিল করতে যবেন, সেটা আইনে স্পষ্টভাবে বলা আছে, কীভাবে যেতে হবে। কী করা যাবে। কী করা যাবে না।’
প্রশাসনে রদবদল প্রশ্নে সিইসি বলেন, ‘প্রশাসনে রদবদল কে কখন করেছিল? আমাদের বলবেন? ১৯৯৬, ২০০১ সালে প্রশাসনে রদবদল নির্বাচন কমিশন করেনি। সরকার করেছিল। ২০০১ সালে লতিফুর রহমান সাহেব করেছিলেন। তিনি কখনও নির্বাচন কমিশনার ছিলেন বলে আমি জানি না। তিনি ছিলেন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। প্রয়োজন মনে করলে আমরা আমাদের স্বার্থে সেটা দেখবো। নির্বাচনের স্বার্থে যেটাকে ভালো মনে করবো এবং যেটা আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে আছে, সেভাবে আমরা করবো। এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে, এখতিয়ার অতিক্রম করে আমরা কোনও কিছু করতে যাবো না।’
সেনা মোতায়েন প্রশ্নে সিইস বলেন, ‘সেনাবাহিনী, নির্বাচনের সময় দেখেছি সেনাবাহিনী থাকে। সেনাবাহিনী নিয়ে আমাদের উদ্বিঘ্ন হওয়ার কারণ নেই। নিজেদের মধ্যে আমরা এটা নিয়ে আলোচনা করেছি। নমিনেশন সাবমিশন শেষ হওয়ার পর কমিশনে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো। আমরা প্রয়োজন মনে করলেৃ এবং আমনা চাইলে সেনাবাহিনী দেবে। এতে কোনও সংশয়বোধ করার কোনও কারণ নেই।’
পুনঃতফসিল প্রশ্নে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এ ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। যদি বিএনপি নির্বাচনে আসে, সেক্ষেত্রে যদি প্রয়োজন হয় রিসিডিউল করা যেতে পারে। সেখানে নির্বাচন পেছানোর কথা বলা হয়নি। রিসিডিউল করে তাদের যদি অ্যাকোমোডেট করার সুযোগ থাকে, সেই জিনিসটা করা হবে। এটা আমাদের কমিশনাররা বলেছেন। এটা আমাদের কমিশনের সমন্বিত বক্তব্য।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিএনপিকে বার বার আহ্বান জানিয়েছি। আমরা সবসময় সংলাপ ও সমঝোতার কথা বলেছি। উৎসবমুখর পরিবেশের কথা বলেছি সবার প্রতি। যদি সমঝোতা হয়, তাহলে আমাদের জন্য বিষয়টি আরও অনুকূল হয়ে ওঠে। সেদিক থেকে আমরা এখনও কোনও অবস্থানের পরিবর্তন করিনি। আমরা এখনও আশা করি, হয়তোবা তারা আসতেও পারে। যদি তারা আসে তাহলে সেটা আমাদের জন্য, জাতির জন্য সৌভাগ্য হবে। কারণ আমরা চাই, নির্বাচনটা অংশগ্রহণমুলক হোক। সকবাই অংশগ্রহণ করুক।’
নির্বাচন-পূর্ব সময় কোনটি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন-পূর্ব সময় যেদিন আমরা তফসিল ঘোষণা করি, সেদিন থেকে ফলাফল ঘোষিত (গেজেট) হাওয়া পর্যন্ত সময়। নির্বাচন-পূর্ব সময়ের মধ্যে কতগুলো স্টেজ আছে। এর একটি ধাপ হচ্ছে নমিনেশন সাবমিটের সময় পর্যন্ত, এরপর বাছাইয়ের একটা সময়। এরপর আরেকটি স্টেজ আছে। আপিল স্টেজ। প্রত্যাহার স্টেজ। এরপর রিটার্নিং অফিসার চূড়ান্ত প্রার্থিতা ঘোষণা করবেন। তারপর প্রচারণা শুরু হবে।’