নির্বাচনে ২৫ থেকে ৩০টি দল অংশ নিতে যাচ্ছে: ওবায়দুল কাদের
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৫ থেকে ৩০টি দল অংশ নিতে যাচ্ছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি অংশ না নিলেও তাদের অনেক প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সব শেষ হওয়ার আগে এ প্রশ্নের ব্যাপারে কিছু না বলাই ভালো।’
সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়নপত্র বিতরণকালে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
‘বিরোধীরা সহিংসতা করছে’, দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা চোরাগোপ্তা হামলা করছে। সরকারি দল দেশের শান্তির জন্য নির্বাচনকে বেছে নিয়েছে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দরকার, আমরা নির্বাচন চাই। আমরা কেন শান্তিপূর্ণ জায়গাটাকে ডিস্টার্ব করবো? কেন সহিংস পরিবেশ চাইবো?’
আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে নির্বাচন হয়, একসঙ্গে সবার মনোনয়ন কে ঘোষণা করেছে? আপনারা প্রতিবেশী দেশগুলোর থেকে একটু জানুন। আমরা মাত্র দুটি আসনে বাকি রেখেছি। সেটা আমাদের টেকনিক্যাল বিষয় থাকতে পারে, কৌশলগত বিষয় থাকতে পারে। সে কারণে আমরা দুটি আসনে প্রার্থীর নাম প্রকাশ করিনি। কৌশলগত দিক থেকে এখানে কোনও ত্রুটি হয়নি।’
বর্তমান সংসদের ৭১ জনের এবার মনোনয়ন না পাওয়ার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সংখ্যাটা বড় কিংবা ছোট, সেটা আমাদের দলের মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্ত। আমরা কাকে বাদ দেবো, কাকে রাখবো; বোর্ডের সিদ্ধান্ত। আমাদের একটাই কথা, উইনেবল এবং ইলেক্টেবল যে প্রার্থী, তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। সেই বিচারে যারা এসেছেন, তারা মনোনয়ন পেয়েছেন। যারা আসেননি, ধরে নিতে পারেন তারা পাননি। আমাদের ক্যাটাগরির মধ্যে যারা পড়েনি, তাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।’
আওয়ামী লীগের জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রশ্নে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কার সঙ্গে কী অ্যাডজাস্টমেন্ট হবে, কাকে কত সিট দেবো, আমরা কীভাবে জোট করবো, জোটটা নির্বাচনের স্বার্থে কোন পথে সুবিধাজনক; অনেক কিছু আমাদের ভাবতে হবে। নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম জমা এবং প্রত্যাহারেও সময় আছে।’
নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেউ অংশ নিলে নির্বাচন ফেয়ার, অংশ না নিলেই নির্বাচনের বৈধ নয়, অংশগ্রহণমূলক নয়; এই কথা দিয়ে কী জাস্টিফাই করবে।’
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর রেওয়াজ আছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন করতে পারে, সেটা করবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দলীয় নেতাদের ব্যাপারে এখনও সুনির্দিষ্ট কিছু বলা হয়নি। এটা আমাদের আরও কিছু বিষয় নিয়ে ভাবনা-চিন্তার ব্যাপার আছে। আমাদের শরিক কারা হবে, যদি আমরা শরিকদের নিয়ে নির্বাচন করি, অথবা অপজিশন কে হয়, সবকিছু বিবেচনা করে, আমাদের ভোটারের উপস্থিতির বিষয়টা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত হবে। গতকাল ঘোষণার পরপরই সারা বাংলাদেশে উৎসব, মিছিল হচ্ছে। মনে হচ্ছে না সেখানে আওয়ামী লীগ আছে, বিরোধী দল নেই। পরিবেশটা একদম নির্বাচনের অনুকূলে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে যে রূপ, সেটাই দেখা যাচ্ছে।’
‘ডামি’ প্রার্থী নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ‘কেস টু কেস’ হতে পারে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
এর আগে রবিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক করতে প্রতিটি আসনে দলীয় ডামি প্রার্থী রাখার নির্দেশনা দেন তিনি। সেইসঙ্গে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের কোনও প্রার্থী নির্বাচিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করেন দলটির প্রধান।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৮টিতে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। রবিবার (২৬ নভেম্বর) প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পরদিন আজ সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হচ্ছে।