হাসপাতালে যুবদল নেতার ডান্ডাবেড়ি: বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটের বিষয়ে আদেশ কাল

প্রকাশিত: ৭:২৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:
কারাবন্দি যশোর জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি অসুস্থ আমিনুুর রহমানকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় চিকিৎসা দেওয়ার ঘটনায় বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদালত আগামীকাল সোমবার (৪ ডিসেম্বর) আদেশ দেবেন। আজ রোববার (৩ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ আদেশ দেন।


আমিনুর রহমানের স্ত্রী নাহিদ সুলতানা লাভলী আজ রোববার (৩ ডিসেম্বর) সকালে রিটটি দায়ের করেন। রিটে আমিনুরকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে চিকিৎসার বৈধতা প্রশ্নে রুল চাওয়া হয়েছে। রুল হলে বিচারাধীন অবস্থায় কারাবন্দিদের হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরানোর বিষয়ে প্রিজনার্স অ্যাক্ট ও জেল কোড প্রয়োগে উপযুক্ত গাইডলাইন সুপারিশের জন্য একটি কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। যথাযথ ও সুচিকিৎসার জন্য আমিনুরকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল অথবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) অথবা সমমানসম্পন্ন ঢাকার অন্য কোনো সরকারি হাসপাতালে পাঠানোর জন্য নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। এ দিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। শুনানির এক পর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতকে বলেন, আমাদের অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানি করবেন।
গত ২৯ নভেম্বর যশোরে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে যুবদল নেতা আমিনুর রহমানকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন বিএনপিপন্থি আইনজীবী। এ সময় স্বপ্রণোদিত আদেশ চাইলে আদেশ দেননি হাইকোর্ট। আদালত তখন বলেছেন, আপনারা আবেদন হিসেবে নিয়ে আসুন।
সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী হাইকোর্টে বলেন, মাই লর্ড ডান্ডাবেড়ি পরানো হয়েছে, আমার বিরুদ্ধে ১০০টা কেস থাকুক তাতে আমার সমস্যা নেই। কিন্তু ডান্ডাবেড়ি পরানো হবে এটা কেমন কথা। ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাসপাতালে আনা হবে, স্বাধীন দেশে এগুলো কেন করা হবে? আপনি একটি স্বপ্রণোদিত আদেশ দেন।
এ সময় হাইকোর্ট বলেন, এগুলোতো স্যাটেল হয়ে গেছে। ৫৪ ধারা স্যাটেল হয়ে গেছে। তারপরও হচ্ছে। এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, আমাদের এটার সমাধান বের করতে হবে। আমরা কি থার্ড ক্লাস সিটিজেন?
পরে হাইকোর্ট বলেন, ডান্ডাবেড়ি ঘৃণ্য অপরাধে পরানো হয়। আপনারা রিট আকারে আসেন। আমরা সুয়োমুটো আদেশ দেবো না।


এর আগে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশের পর আমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে চারটি মামলা করে পুলিশ। ২ নভেম্বর সদর উপজেলার আমদাবাদ কলেজ থেকে তাকে গ্রেফতার করে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে প্রথমে যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১৩ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এসময়ও তার পায়ের ডান্ডাবেড়ি খোলা হয়নি। এমনকি খাওয়ার সময়ও হাতকড়া খুলে দেয়নি পুলিশ।