বগুড়া প্রতিনিধি:
দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির গরু নিয়ে বগুড়ায় শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী গরুমেলা। এর আয়োজক বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মস অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ)। আজ শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় মমইন ইকো পার্কে আনুষ্ঠানিকভাবে গরুমেলার উদ্বোধন করেন বগুড়া-৬ সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে গোখাদ্যের দাম চড়া। অন্যদিকে মাংসের দামও বেশি। তাই মাংসের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে দেশে গরুর উৎপাদন বাড়ানো প্রয়োজন। মেলার মাধ্যমে সবাই গরুর বিভিন্ন জাত সর্ম্পকে জানতে পারবেন। দেশে মাংসের যে চাহিদা তা মেটানোর উদ্দেশ্যেই এ মেলার আয়োজন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পাদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ। বিডিএফএর প্রেসিডেন্ট ইমরান হোসেনের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পাদ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক এমদাদুল হক তালুকদার, এসিআই এগ্রিবিজনেসের প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারি, টিএমএসএসের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক ড. হোসনে আরা বেগেম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উত্তরঙ্গ গরুমেলার সদস্য সচিব অর্ক খান, রাহাত খান, সদস্য রাকিবুল ইসলাম, আতিকা এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রহমান ও খামারি সাকিব।
সরেজমিন দেখা যায়, মেলার মাঠে লম্বা লাইন করে গরুগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছে। খামারির লোকজন গরুর নিয়মিত পরিচর্যা করছেন। গরুর খাবার দেওয়া হচ্ছে। মেলায় রয়েছে বিভিন্ন দামের আকর্ষণীয় গরু। মেলায় রয়েছে ব্রাহামা, আরসিসি, নর্থ বেঙ্গল গ্রে, শাহিওয়াল, সিজারিয়ান, ভুট্টীসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের গরু। এসব উন্নত জাতের গরু থেকে প্রচুর পরিমাণে মাংস ও দুধ উৎপাদন হয়। তবে মেলার মাঠে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের কাছে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ ২৭ ইঞ্চি উচ্চতার ভুট্টী জাতের গরুকে ঘিরে। ক্ষুদ্রাকৃতির গরুটি দেখে সবাই মুগ্ধ।
মেলায় আসা আর কে এগ্রোর স্বত্বাধিকারী রাহাত খান বলেন, গরু নিয়ে এত বড় আয়োজন আগে কখনো দেখিনি। মেলায় আমি খামারের সেরা তিনটি গরু নিয়ে এসেছি। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে খামারিরা এখানে এসেছেন।
দিনাজপুর থেকে আসা সাহেব এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী সাহেব আলী বলেন, মেলায় বিভিন্ন জাতের গরু দেখতে এসেছি। গরু পছন্দ করছি। দাম সাধ্যের মধ্যে থাকলে খামারের জন্য বেশকিছু গরু কেনার ইচ্ছা আছে।
মেলার প্রধান সমন্বয়ক তৌহিদ পারভেজ বিপ্লব জানান, ব্যতিক্রমী এ মেলায় কয়েকশ খামারি তাদের সেরা গরু তুলেছেন। এছাড়া রয়েছে গাড়ল, মহিষ, ছাগল, দুম্বা, ভেড়াসহ নানা জাতের পোষা প্রাণী ও পাখি। মেলায় দেড়শটির বেশি স্টল রয়েছে। রয়েছেন আড়াইশোর মতো খামারি। মেলার মূল আকর্ষণ হিসেবে থাকছে গরুর র্যাম্প শো। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মেলায় ৭২টি পুরস্কার দেওয়া হবে।
তৌহিদ পারভেজ বলেন, প্রান্তিক খামারিদের জন্য এ মেলা একটি বড় সুযোগ। এখানে তারা পালন করা প্রতিটি গরু ভালো দামে দেশের স্বনামধন্য খামারিদের কাছে বিক্রি করতে পারবেন। মেলাটি খামারিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।