মানবাধিকার লঙ্ঘন: একাধিক দেশের ৯০ ব্যক্তির ওপর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: ৪:২২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৯, ২০২৩

ডেস্ক রিপোর্ট:

সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার ৭৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত ৯০ ব্যক্তির ওপর সমন্বিত নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) এই নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

নিষেধাজ্ঞার দীর্ঘ তালিকায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানবপাচারকারী, আফগানিস্তানে মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত তালেবান কর্মকর্তা থেকে শুরু করে হাইতির সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের নেতারা রয়েছেন।

১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে যুক্তরাজ্য ৪৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে তাদের সম্পদ জব্দ ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা।

১৩ দেশের ৩৭ ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর কানাডা যৌথ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সাত ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, আমরা বিশ্বের সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতাকে পদদলিত করে এমন অপরাধী ও নিপীড়ক শাসনকে মেনে নেব না।

সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার ৭৫ বছর পরও যারা মানুষের স্বাধীনতা খর্ব করে তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য ও আমাদের মিত্রদের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে। জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার পর শুরুর দিকে ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর এই সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়েছিল। এটিই ছিল মানবজাতির অবিচ্ছেদ্য অধিকারের প্রথম বৈশ্বিক ঘোষণা। এতেই প্রথম মানুষের মৌলিক অধিকার ও সবার জন্য স্বাধীনতার রূপরেখা তৈরি হয়।

যুক্তরাজ্যের তালিকায় বেলারুশের আইনব্যবস্থার ১৭ সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন অ্যাক্টিভিস্ট, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ আনা প্রসিকিউটররা।

ইরানে বাধ্যতামূলক হিজাব আইন জারি ও বাস্তবায়নে জড়িত পাঁচ ব্যক্তিকে তালিকায় রাখা হয়েছে। এছাড়া কম্বোডিয়া, লাওস ও মিয়ানমারের নয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনলাইনে প্রতারণার মাধ্যমে মানবপাচারের জড়িত থাকার অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, আজকের পদক্ষেপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের কয়েকটি ক্ষতিকর ও ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনকে শনাক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে সংঘাত সংশ্লিষ্ট যৌন সহিংসতা, জোরপূর্বক শ্রম এবং আন্তর্জাতিক নিপীড়ন। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় তালেবানের এক সিনিয়র কর্মকর্তা রয়েছেন।

২০২১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর নারী ও মেয়েদের শিক্ষা নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণে এই কর্মকর্তা জড়িতছিলেন।

ব্লিঙ্কেন বলেছেন, শুক্রবার জারি করা মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি হাইতির চারটি অপরাধী চক্রের নেতা ও ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর পাঁচটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে আহ্বান জানাবে ওয়াশিংটন।

কানাডার নিষেধাজ্ঞাভর তালিকায় চেচনিয়ায় এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের অধিকার লঙ্ঘনে জড়িত চার রুশ নাগরিক এবং মিয়ানমার জান্তা প্রধান রয়েছেন।

যুক্তরাজ্য ও কানাডার সঙ্গে সমন্বিত এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যখন মানবাধিকার প্রতি শ্রদ্ধাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে আন্তর্জাতিক আইনভিত্তিক শাসন ব্যবস্থার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মিত্রদের সঙ্গে সমন্বিতভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হয় তখন আমাদের উদ্যোগগুলো আরও শক্তিশালী ও টেকসই হয়।