গাজীপুরে ট্রেনে নাশকতায় ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ ৪ জন রিমান্ডে
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
গাজীপুরের শ্রীপুরে বনখড়িয়া এলাকায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ ৭টি বগি লাইনচ্যুতের ঘটনায় করা মামলায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান আজমল ভূঁইয়ায়াসহ ৪ আসামির প্রত্যেকের ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুলহাস উদ্দিনের আদালত শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডপ্রাপ্ত বাকি ৩ আসামি হলেন- সাইদুল ইসলাম, জুলকারনাইন হৃদয় ও সোহেল রানা। আজ সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) আদালতে ঢাকা রেলওয়ে থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গাজীপুর রেললাইনে নাশকতার মামলায় রোববার চারজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুলহাস উদ্দিনের আদালতে আসামি শাহনুর আলম, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে আসামি মেহেদী হাসান ও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মুজাহিদুল ইসলামের আদালতে আসামি জান্নাতুল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এদিকে আসামিদের আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. সালাহউদ্দিন রিমান্ড ও জবানবন্দি গ্রহণের আবেদনে উল্লেখ করেন, গত ১১ ডিসেম্বর রাতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সাবেক বিএনপি নেতা হাসান আজমল ভূঁইয়ার বাসায় ২৫/৩০ জন দলীয় নেতাকর্মী রেললাইনে নাশকতার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৩ ডিসেম্বর ভোর ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে গাজীপুর জেলাধীন শ্রীপুর উপজেলার প্রহল্লাদপুর ইউনিয়নের বনখড়িয়া রেললাইনের চিনাই রেল ব্রিজমুখী ঢাকাগামী রেললাইনের বামপাশের প্রায় ১৭.৫০ ফুট লাইন কেটে স্থানচ্যুত করে ফেলেন। এতে মোহনগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী ‘মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস’ লাইনচ্যুত হয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ট্রেনটির ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি রেললাইনের ডানে ও বামে পরে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হন এবং ১০ জন গুরুতর আহত হন।
এরপর ১৬ ডিসেম্বর অভিযান চালিয়ে হাসান আজমল ভূঁইয়াসহ ৭ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। আসামিদের মধ্যে শাহানুর আলম, জান্নাতুল ও মেহেদী হাসান স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে চাইলে তা রেকর্ড করতে ও বাকি চার আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এদিকে ‘মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস’ ট্রেনে নাশকতার ঘটনায় গত ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী পরিচালক আশ্রাফুল আলম খাঁন বাদী হয়ে ঢাকা রেলওয়ে থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজসে নাশকতা করে ট্রেনের যাত্রীদের হত্যা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যাপক ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে বর্ণিত স্থানে প্রায় ২০ ফিট অক্সি-অ্যাসিটিলিন সিলিন্ডার ও এলপিজি সিলিন্ডারের মাধ্যমে গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে রেললাইনটি বিচ্ছিন্ন করে রাখেন। এতে ট্রেনের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে আসলাম নামে এক যাত্রী নিহত হন। আহত হন ৭-৮ জন।