সাইফুল ইসলাম:
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেছেন, মেট্রোরেলে হামলার কোনো তথ্য বা আশঙ্কা নেই। তবে নিরাপত্তার জন্য হ্যান্ডেল ডিটেক্টর থাকবে। লাগেজ স্ক্যানার বসাতে অনুরোধ জানাচ্ছি। কর্তৃপক্ষ যেন লাগেজ স্ক্যানার ও আর্চওয়ে বসাতে তারাতারি পদক্ষেপ নেয়। আজ বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, আপনারা জানেন মেট্রোরেল পুলিশের অর্গানোগ্রাম তৈরি করা হয়েছে। সেখানে এখন একজন ডিআইজি ও তার জনবল রয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ সদরদপ্তর প্রযোজনীয় বাড়তি জনবল দিয়েছে। শুরু থেকে এর নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল ডিএমপি। আজকেও ডিএমপির ১৩২ জন পুলিশ সদস্য মেট্রোরেল পুলিশের সঙ্গে মিলে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এরই ধারবাহিকতায় আজ আমরা মেট্রোরেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন করেছি। আমরা সবকিছু দেখলাম। ছোটখাটো যা করণীয় আমরা নিরাপত্তার খাতিরে আলোচনা করে পরিকল্পনা নেবো। এই বিষয়ে আমরা সবার সহযোগিতা নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটনের প্রতিটি বাহন, মেট্রোরেলের প্রতিটি অংশের নিরাপত্তায় আমার কাজ করবো।
মেট্রোরেলে নিরাপত্তায় নতুন সংযোজন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুধু সিসি ক্যামেরা থাকলেই হয় না। সেটাকে মনিটরিং করতে হয়, নজরদারিতে রাখতে হয়। নজরদারিতে যদি কারও চলাচলে অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া যায় সেটিকে দ্রুত নোটিশ করতে হয়। আর এটা করতে সব নিরাপত্তাকর্মীর হাতে ওয়ারলেস সেট থাকতে হয়, যা আমরা দেশের বাইরে দেখেছি। আমাদের হ্যান্ডেল ডিটেক্টর থাকবে। লাগেজ স্ক্যানার বসাতে অনুরোধ জানাচ্ছি। কর্তৃপক্ষ যেন লাগেজ স্ক্যানার ও আর্চওয়ে বসাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। একই সঙ্গে বিস্ফোরকজাতীয় পদার্থ যেন শনাক্ত করতে পারে সেই ধরনের মেশিনও রাখার অনুরোধ করছি। কারণ যোগাযোগের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় যত ধরনের নিরাপত্তার প্রয়োজন হয় সব নেওয়া উচিত। নগরীর সবাইকে ভালো রাখতে ডিএমপির যে চেষ্টা, তারই অংশ এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
মেট্রোরেলে নাশকতার ঝুঁকি রয়েছে কি না জানতে চাইলে ড. মহিদ উদ্দিন বলেন, নাশকতাকারীরা জানান দিয়ে কোনো অপরাধ করে না। সে জন্যেই আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তবে হামলার কোনো তথ্য বা আশঙ্কা নেই। আমরা প্রতিটি স্থানে প্রতিদিন নিরাপত্তা বাড়াচ্ছি। শুধু মেট্রোরেল না- রেল, বাসস্টেশন ও রাস্তাসহ সব স্থানেই আমাদের চেষ্টা থাকে নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ করা যায়।
তেজগাঁওয়ে যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কাজ চলছে। ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। অন্য কাজসহ তদন্ত চলছে। তবে বলার সময় এখনো আসেনি। আরেকটু সময় লাগবে। বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট যারা তদন্তে পারদর্শী তারা সবাই কাজ করছে। আপনারা খুব শিগগির জানতে পারবেন। কোনো ঘটনা ঘটলে বেশিরভাগই চিহ্নিত করা হয় এবং জড়িতরা গ্রেফতার হয়।
নাশকতাকারীদের উদ্দেশ্যে ডিএমপির এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আপনারা নাশকতা বন্ধ করুন। কারণ মানুষের প্রতি এমন নির্মমতার কোনোদিনই জয় হয় না। বরং জয় হয় মানুষ ও শান্তির। সেই স্থানে আপনারা থাকেন, যাতে আপনাদেরও আইনের আওতায় না আসতে হয়।