দেশের মোট কনটেইনারের ৯৮ শতাংশ পরিবহন হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ
শিল্পের কাঁচামাল, মূলধনি যন্ত্রপাতি, বাণিজ্যিক পণ্য— সবই আনা হয় কনটেইনারে। আবার সমুদ্রপথে রপ্তানি পণ্যের প্রায় পুরোটাই কনটেইনারে পাঠানো হয়। দেশের মোট কনটেইনারের ৯৮ শতাংশ পরিবহন হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। এই বন্দর দিয়ে গত বছরের তুলনায় কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যা কমেছে প্রায় ৩ শতাংশ।
বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, বৈশ্বিক সংকটের প্রভাবে সমুদ্রপথের বাণিজ্য কমেছে। ফলে কনটেইনারে পণ্য পরিবহনও কমেছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, বন্দরের মূল জেটি, ঢাকার কমলাপুর কনটেইনার ডিপো ও কেরাণীগঞ্জের পানগাঁও নৌ-টার্মিনালে কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যা যোগ করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, বিদায়ী বছরে (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) বন্দর দিয়ে কনটেইনার (প্রতিটি ২০ ফুট লম্বা) ৩০ লাখ ৫০ হাজার ৭৯৩টি ইইউএস হ্যান্ডলিং হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৯১ হাজার ৭১১টি ইইউস কম।
২০২২ সালে ৩১ লাখ ৪২ হাজার ৫০৪ টিইইউস হ্যান্ডলিং হয়েছে। কনটেইনার পরিবহন শতকরা হিসেবে প্রায় ৩ শতাংশ কমেছে। ২০২১ সালে হ্যান্ডলিং হয়েছিল ৩২ লাখ ১৪ হাজার ৫৪৮ টিইইউস।
গত এক দশকে কনটেইনার পরিবহনে প্রথম ধাক্কা আসে করোনার সময়।
মহামারি এই ভাইরাসটির প্রভাবে বিশ্বব্যাপী সমুদ্রপথের বাণিজ্যে অচলাবস্থা তৈরি হয়। উৎপাদন খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাতে ২০২০ সালে কনটেইনার পরিবহনও ২ শতাংশ কমে যায়। করোনা কাটিয়ে ওঠার পর ২০২১ সালে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে আমদানি-রপ্তানি খাত। তবে ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ডলার সংকটে পণ্য আমদানি কমতে থাকে।
আর বিদায়ী বছরে ডলার সংকট থেকে বের হওয়া যায়নি। বরং আমদানি নিয়ন্ত্রণে আরো কড়াকড়ি আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসবের প্রভাবে বিদায়ী বছরেও ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি থেকে বের হতে পারেনি বন্দর।
কনটেইনার পরিবহন কমায় বৈশ্বিক তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান আরো পিছিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। ২০২২ সালে কনটেইনার পরিবহন কমে যাওয়ায় তিন ধাপ পিছিয়ে ৬৭তম অবস্থানে চলে যায় চট্টগ্রাম বন্দর। লন্ডনভিত্তিক পুরোনো সংবাদ মাধ্যম লয়েডস লিস্ট গত বছর এ তথ্য প্রকাশ করে।
গত বছর কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যা হিসাব করে এ বছরের মাঝামাঝি বৈশ্বিক ক্রমতালিকা প্রকাশ করবে সংস্থাটি। তাতে যে সুসংবাদ থাকবে না, তা কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যা কমার চিত্র তুলে ধরেছে।
বিজিএমইএ’র প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ইউরোপে তৈরি পোশাক শিল্পে মন্দা চলছে। পোশাকের চাহিদাও আগের তুলনায় কমছে। এর প্রভাব পড়েছে বন্দরে পণ্য ওঠানামায়। বিদায়ী বছরে নানা সমস্যার মধ্যে গেছে পোশাকশিল্প। এরই প্রতিফলন ঘটেছে কনটেইনার পরিবহনে। পোশাকে সুখবর না আসলে বন্দরেও কনটেইনার পরিবহন বাড়বে না।
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, বৈশ্বিক সংকটের প্রভাবে সমুদ্রপথের বাণিজ্য কমেছে। ফলে কনটেইনারে পণ্য পরিবহনও কমেছে। আবার অপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক পদক্ষেপ নিয়েছে। এ কারণে কনটেইনারে পণ্য আমদানিও কিছুটা কমেছে। তবে পণ্য পরিবহন কমলেও বন্দরের সেবার মান বেড়েছে। পণ্য হাতে পেতে দেরি হচ্ছে না।