খাবারের হাহাকার গাজায়, অনাহারের নীতির নিন্দায় ইসরায়েলি সংস্থা
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
আন্তর্জাতিক ডেক্স:
ইসরায়েল-অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ইসরায়েলি সংস্থা বিটিসেলেম বলেছে, ‘‘গাজার মানুষের অনাহারে থাকার ঘটনা যুদ্ধের কারণে নয়, বরং ইসরায়েলের ঘোষিত নীতির প্রত্যক্ষ ফল।’’ গাজার বাসিন্দাদের জীবনে নেমে আসা দুর্দশা আর অনাহার-অর্ধাহারের অবসানে শিগগিরই ইসরায়েলি যুদ্ধ নীতিতে পরিবর্তন আনার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
‘‘শিশুরা খাবারের জন্য ভিক্ষা করছে, লোকজনকে সামান্য সহায়তার জন্য দীর্ঘ সারিতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে এবং ক্ষুধার্ত বাসিন্দারা ত্রাণের ট্রাকের দিকে ছুটছেন। ইতিমধ্যে অকল্পনীয় এমন চিত্র সেখানে দেখা যাচ্ছে। মুহূর্তের মধ্যে সেখানে ভীতিকর পরিস্থিতি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি একেবারে বাস্তব। তারপরও ইসরায়েল তার নীতিতে অনড়।’’
ইসরায়েলি এই মানবাধিকার সংস্থা বলেছে, এই নীতি পরিবর্তন করা কেবল নৈতিক বাধ্যবাধকতা নয়, বরং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের আওতায় একটি প্রয়োজনীয়তাও।
বিটিসেলেম বলেছে, ‘‘যুদ্ধের কৌশল হিসেবে অনাহার নিষিদ্ধ এবং বেসামরিক জনগণের বেঁচে থাকার জন্য যা প্রয়োজন তার অভাব থাকলে সংঘাতে লিপ্ত পক্ষগুলোর জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়; যাতে তারা খাদ্যসহ মানবিক সহায়তা দ্রুত এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রবেশের অনুমতি দেয়।’’
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে হামাস যোদ্ধারা অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। ইসরায়েলি বাহিনীর তিন মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা। গত ২৪ ঘণ্টায় এই উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ২৪৯ ফিলিস্তিনি। এ নিয়ে ইসরায়েলের হামলায় ২২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে। নিহতদের বেশিরভাগই নারী, শিশু, অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক লোকজন।
হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর-সহায় সম্বল হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনীর গত ৩ মাসের অভিযানে বাস্তুহারা হয়েছেন অন্তত ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি।
অন্যদিকে, হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। পাশাপাশি, ইসরায়েলের ভূখণ্ড থেকে ২৪২ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে সেদিন জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা। তাদের মধ্যে এখনও মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছেন ১২৯ জন জিম্মি।