সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রলোভনে নারীর অশ্লীল স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারণের অভিযোগ রয়েছে।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে সাতক্ষীরা শহরের উত্তর কাটিয়া ঈদগাহর সামনের সড়ক থেকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ফাঁদ পেতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই যুবকের নাম মারুফ হোসেন বাপ্পী (২৬)। তিনি সাতক্ষীরা পৌর এলাকার মুনজিতপুর গ্রামের মৃত আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে।
সম্প্রতি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেন ওই যুবক। ২৫ ডিসেম্বর ওই ছাত্রীর বাবা সাতক্ষীরা সদর থানায় এর প্রতিকার চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ওই ছাত্রী জানান, প্রথমে টেলিগ্রাম অ্যাপে এবং পরবর্তীতে হোয়্যাটসঅ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জারে তাকে এবং তার বন্ধুদের এআই দ্বারা প্রস্তুত করা কিছু কুরুচিপূর্ণ ছবি দিয়ে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করেন মারুফ। এ ঘটনায় ওই ছাত্রী এবং তার পরিবার পুলিশের সঙ্গে পরামর্শ করে ওই যুবককে ধরতে বিশেষ ফাঁদ পাতেন। সেই ফাঁদে পা দিয়ে ১২ জানুয়ারি ঢাকা থেকে সাতক্ষীরায় যান ওই যুবক। পরে ওই যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
সাতক্ষীরা সাইবার ক্রাইম এলার্ট টিমের এডমিন শেখ মাহবুবুল হক জানান, মারুফ হোসেন বাপ্পী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। পরে তাদের কাছ থেকে ভিডিও কলে বা হোয়াটসঅ্যাপ-ম্যাসেঞ্জার-টেলিগ্রামে ন্যুড ছবি সংগ্রহ করতেন। সুবিধামতো সময়ে তাদের ছবি ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে হাতিয়ে নিতেন অর্থ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গ্রেফতার বাপ্পী ‘ডা. আরমান হোসন নিলয়’ হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন নারীদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ধারণ করে পরে প্রতারণা করতেন। কখনো অর্থ হাতিয়ে নিতেন, আবার কখনো শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য করতেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ওই ছাত্রীর বাবা বাপ্পীর বিরুদ্ধে ২০১২ সালে প্রণীত পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের ৮(১),/৮(৫)(ক) ধারায় মামলা করেন। গ্রেফতার আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।