নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
নারায়ণগঞ্জের গ্যাসের চাপ কম থাকায় প্রায় ৪০০ ডাইংসহ শিল্প-কারখানায় স্বাভাবিক উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেঠে। এ নিয়ে শিল্প কারখানার মালিক থেকে শিল্প সংগঠনগুলোর নেতাদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, গ্যাস সংকটের কারণে শিল্প কারখানার সার্বিক উৎপাদন ৪০ শতাংশে নেমে এসেছে। গ্যাস সংকটের কারণে ডাইং ও শিল্প-কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সময় মতো শিপমেন্ট (রপ্তানি প্রক্রিয়া) করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বিভিন্ন বিদেশি বায়াররা ক্ষুব্ধ হচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে নিটওয়ার এক্সপোর্ট কার্যক্রমে ধস নামবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
নারায়ণগঞ্জের গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস অফিসের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের পাইপলাইনে গ্যাসের চাহিদা ৮৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট। ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সংকট আছে। নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের শিল্প-কারখানা ও বাসা-বাড়িতে গ্যাসের চাহিদা ১৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে ন্যাচারাল বা পাইপলাইনে গ্যাসের চাহিদা ৮৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। আর এলএনজির চাহিদা ৬৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। কিন্তু চাহিদার তুলনায় ন্যাচারাল গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এলএনজি মোটেও পাওয়া যাচ্ছে না।
নিট পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, তীব্র গ্যাস সংকট রয়েছে। দিনে বা রাতে কোনো সময়ই গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। গ্যাস সংকট তীব্র হওয়ার কারণে উৎপাদন একেবারেই বন্ধ রয়েছে। রপ্তানি অব্যাহত রাখতে হলে বিদেশ থেকে ফেব্রিকস আমদানি করতে হবে। এতে ডলার সংকট বাড়বে, রিজার্ভ আরও কমে আসবে এবং আমদানি ব্যয় বাড়বে।
একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের আশ্বাস দিয়ে প্রতি ইউনিট ১১ থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে। তারপরও গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না। আমাদের কারখানা কম্পোজিট প্রোজেক্ট। এখানে কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করেন। গ্যাস সংকটে ডিজেল দিয়ে ডাইং কারখানায় উৎপাদন করা গেলেও স্ট্যান্ডার্ড ও ড্রাক করা যাচ্ছে না। আর ফ্যাব্রিকস ডাইং করাতে না পেরে সুইং, ফিনিশিং, নিটিং অ্যান্ড প্রিন্টিং সেকশনের শ্রমিকদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিতে হচ্ছে। গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক না থাকায় পণ্য বিদেশে রপ্তানি অর্ধেকে নেমে এসেছে।
বিকেএমইর সাবেক প্রথম সহসভাপতি ও ফতুল্লা ক্রোনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএইচ আসলাম সানি বলেন, গ্যাস সংকটে নারায়ণগঞ্জে প্রায় ৪০০ ডাইং কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। যার উৎপাদন ক্ষমতা বা ডাইং ক্যাপাসিটি ৩০ টন ফ্যাব্রিকস সে উৎপাদন করছে মাত্র এক বা দুই টন। বৈদেশিক মুদ্রার ৮৫ শতাংশ আয় হয় গার্মেন্টস খাত থেকে। তাই গ্যাস সংকট দ্রুত সমাধানে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।