বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে সৌদি আরবের রাজপরিবারের একাধিক সদস্য আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে রাজপরিবারের প্রায় ১৫০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই রাজপরিবারের নিচের দিকে অবস্থান করছেন। তবে উচ্চপর্যায়ের সদস্যও আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
খবরে বলা হয়েছে, রিয়াদের ৭০ বছর বয়সী গভর্নর সৌদি প্রিন্স ফয়সাল বিন বানদার বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। বাদশাহ সালমান ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সংক্রমণ এড়াতে আইসোলেশনে রয়েছেন।
ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির আশঙ্কার রাজপরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা দেওয়া অভিজাত হাসপাতালে অতিরিক্ত ৫০০ বেড প্রস্তুত করা হচ্ছে।
কিং ফয়সাল স্পেশালিস্ট হাসপাতালের চিকিৎসকদের মঙ্গলবার এক ইলেক্ট্রনিক বার্তায় ভিআইপিদের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, আমরা জানি না কতজন আক্রান্ত হতে পারেন, কিন্তু তবু সর্বোচ্চ সতর্কতা নিতে হবে। এতে সব সংক্রামক রোগীকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে এবং শুধু একেবারে জরুরি রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই নির্দেশের অর্থ হলো, হাসপাতালের আক্রান্ত কর্মীদের কম অভিজাত হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হবে। যাতে করে রাজপরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার সুযোগ রাখা যায়।
সৌদি রাজপরিবারে প্রায় ১৫ হাজার সদস্য রয়েছেন বলে ধারণা করা হয়। রাজপরিবারে কয়েক হাজার প্রিন্স রয়েছেন, যারা নিয়মিত ইউরোপ ভ্রমণ করেন। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের কেউ কেউ বিদেশে আক্রান্ত হয়ে সৌদিতে ফিরে অন্যদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে দিয়েছেন।
৩ কোটি ৩০ লাখ জনসংখ্যার সৌদি আরবে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৯৩২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের। পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনার সব মসজিদ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে এই বছরের জন্য ওমরাহ। গুরুত্বপূর্ণ ৫টি শহর লকডাউন করা হয়েছে।
জুলাইয়ের শেষ দিকে অনুষ্ঠিতব্য হজের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি। গত বছর হজে আড়াই কোটি মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই রাজপরিবারের নিম্নসারির সদস্য। দেশটিতে আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই মক্কা ও মদিনার অভিবাসী শ্রম শিবিরে বসবাসকারী।
তবে সৌদি আরবের বিভিন্ন স্থানে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় ৮৪ বছরের বাদশাহ সালমান জেদ্দাহ’র কাছে একটি দ্বীপ প্রাসাদে আইসোলেশনে গেছেন। লোহিত সাগরের উপকূলে একটি জায়গায় অবস্থান নিয়েছেন যুবরাজ।
সৌদি আরবের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাওফিক আল-রাবিয়াহ মঙ্গলবার বলেছেন, দেশে ভাইরাসের বিস্তারের সূচনা মাত্র। গবেষণায় আশঙ্কা করা হচ্ছে, আগামী কয়েক সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ থেকে ২০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।