যশোরে ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, বেড়েছে শীতের প্রকোপ

প্রকাশিত: ১২:১২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২৪

জেলা প্রতিনিধি, যশোর

সকাল সাড়ে ৭টা। যখন তড়িঘড়ি করে রিকশা নিয়ে ভাড়া টানার কথা, তখন যশোর শহরের বকুলতলায় এক চায়ের টঙ ঘরে দাঁড়িয়ে ছিলেন রফিক হোসেন নামে এক অর্ধবয়স্ক রিকশাচালক। রিকশা বাইরে রেখে বলছিলেন, ‘বৃষ্টিতি শীত আট্টু বাড়ায় দি গেল, ভাড়া মারবানি কিয়েরে আজকে, তা কবেন কিডা।’

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) ভোর ৫টা থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। শীতের মধ্যে হঠাৎ বৃষ্টি যেমন শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দিয়েছে, তেমনি ছেদ পড়েছে কর্মজীবী মানুষের স্বাভাবিক চলাচলে।

যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমানঘাটির আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এদিন যশোরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

গত কয়েক দিনের তীব্র শীতে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া ছিন্নমূল মানুষেরা। সময়মতো কাজে যেতে পারছেন না তারা। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে অনেককে।

জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর দরিদ্র অসহায় ছিন্নমূলদের জন্য ৬১ হাজার কম্বল বরাদ্দ ছিল যার ৫৫ হাজার কম্বল ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় বিতরণ করা হয়েছে। বেসরকারি সংস্থাগুলোর শীত বস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম এ বছর শুরু হয়নি বললেই চলে। জেলায় তেমন কোনো সংগঠনের পক্ষ থেকে ছিন্নমূল বা দরিদ্রদের জন্য কম্বল বিতরণ করতে দেখা যায়নি।

ইজিবাইকচালক শহরের ধর্মতলা এলাকার আব্দুল আলীম বলেন, ‘ভোরে শীতের সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। তার সঙ্গে বাতাস তো আছে। বৃষ্টি ও শীতে কারণে ইজিবাইক চালাতে কষ্ট হচ্ছে।’তিনি আরও বলেন, ‘অন্য বছর বিভিন্ন সংগঠনের থেকে কম্বল পেলেও এ বছর তিনি কোনো কম্বল পাননি।’

শহরের রিকশাচালক রমজান আলী বলেন, এ শীতে হাত-পা সব কালা হয়ে যাচ্ছে। রিকশার হ্যান্ডেল ধরে রাখা যায় না। তবুও পেটে কি আর এসব মানে? বাড়ির লোকের কথা চিন্তা করলে শীত পলায় যায়।

যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী আহসান আব্দুল্লাহ লাবিন বলেন, ‘শীতে বাইরে চলাচল করা যাচ্ছে না। তারপরও ভোর থেকে আবার বৃষ্টি পড়ছে। জনজীবন বিচ্ছিন্ন হওয়ার মত একটা অবস্থা বিরাজ করছে। এরপরেও আমাদের কোচিং প্রাইভেট চালু আছে তাই বাধ্য হয়ে বাইরে বেরিয়েছি।’

জেলা ত্রাণ ও পুর্বাবাসন কর্মকর্তা মুহাম্মদ রিজিবুল ইসলাম বলেন, জেলার অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য ৬১ হাজার কম্বল বরাদ্দ ছিলো তার মধ্যে ৫৫ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও আরও ৭৫ হাজার কম্বলের চাহিদার কথা কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।