নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
শীত আর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে বরিশালের সব মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হলেও খোলা রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। এর ফলে ভোরে শীত উপেক্ষা করে, বৃষ্টিতে ভিজে কোমলমতি শিশুদের স্কুলে আসতে দেখা গেছে। সপ্তাহখানেক ধরে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা কম হলেও যারা আসছেন তারা অনেকেই ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) ভোর থেকে বরিশাল ও জেলার বাইরের বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই তথ্য জানা গেছে। এরমধ্যে বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুটি, বাবুগঞ্জ উপজেলার তিনটি, সদর উপজেলার চরামোদ্দি ইউনিয়নের ৫নং গুয়াখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিটি কর্পোরেশন এলাকার এ কাদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পোর্ট, রসুলপুর, কাউনিয়া হাজেরা খাতুন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগাযোগ করে স্কুল খোলা রাখার তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে।
এসব স্কুলের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর উপস্থিতির সংখ্যা একেবারে কম। তারপরও অনেক শিক্ষার্থী ভিজে ক্লাসে আসছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে। আজকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ও বন্ধ রাখা যেত। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে নির্দেশনা না পাওয়ায় বৈরী আবহাওয়ায়ও খোলা রাখা হয়েছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়াও বিভাগের সব জেলায় কিন্ডারগার্টেন স্কুল খোলা ছিল বলে বিভাগীয় প্রাইমারি ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ আক্তারুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল কল রিসিভ করেনি। তবে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল জানান, বৈরী আবহাওয়া হলেও আমাদের স্কুল বন্ধের কোন নির্দেশনা পাইনি। মূলত প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগীয় উপ-পরিচালকের কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেবেন।
বিভাগীয় উপ-পরিচালক মিজ নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, সরকারের নির্দেশনা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে বিদ্যালয় বন্ধ রাখতে হবে। কিন্তু বিভাগের কোথাও ১০ ডিগ্রির নিচে আমরা পাইনি। এজন্য স্কুল বন্ধ করা হয়নি। তারপরও জেলা অফিসারদের নির্দেশনা দেওয়া আছে ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে স্কুল বন্ধ করে দিতে।
তিনি বলেন, বরিশালের কোথাও ৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা আমরা পাচ্ছি না। কিন্তু আপনারা (সাংবাদিক) গতকালও বলেছেন ভোরে ৯ ডিগ্রির মতো ছিল। অথচ আমরা আবহাওয়া অফিসে যোগাযোগ করে পেয়েছি ১০ এর উপরে। এভাবে হলেতো বিভ্রান্তি ছড়াবে।
মাধ্যমিক জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসাইন জানিয়েছেন, তাপমাত্রা হ্রাস ও বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করায় মাধ্যমিক শ্রেণির সব বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ বশির আহমেদ ও পর্যবেক্ষক হুমায়ূন কবির জানান, বুধবার বরিশালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৯ ডিগ্রির নিচে নামলে সেটিকে শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। যদিও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা বেড়েছে। আজকে (বৃহস্পতিবার) ভোর থেকে তাপমাত্রা রয়েছে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভোর থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এতে আরও বেশি ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে।