চার গ্রুপে বিভক্ত বিএনপির নেতারা

‘চমকে’র খোঁজে

প্রকাশিত: ৯:৫২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিনিধি:

কখনও ফুল, কখনও লিফলেট, কখনও শীতবস্ত্র বিতরণের মধ্য দিয়ে সময় পার করছেন বিএনপির দৃশ্যমান নেতারা। পাশাপাশি ভেতরে-ভেতরে চলছে পর্যালোচনা-বিশ্লেষণ—আগামী দিনের রাজনৈতিক কৌশল ও নীতি কী হবে? দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর রাজনৈতিক নীতি-কৌশল নির্ধারণ করতে এখনও ‘যথাযথ’ কোনও অবস্থানে পৌঁছাতে পারছে না বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। ঠিক কী কারণে আটকে আছে বিএনপি?

বিএনপির স্থায়ী কমিটিসহ বিভিন্ন পর্যায়ে আলাপ করে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকারকে দাবি মানাতে ব্যর্থ হওয়ায় সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এই প্রতিক্রিয়ার কেন্দ্রবিন্দুতে বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। যাদের মধ্যে একটি অংশ বিদেশে, একটি অংশ কারাগারে, একটি অংশ আত্মগোপনে ও কয়েকজন রয়েছেন প্রকাশ্যে।

দলের প্রভাবশালী একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল নেতা জানান, বিএনপির সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় এখন চারটি গ্রুপ বা অংশ রয়েছে। যে কারণে শীর্ষ নেতৃত্ব কেবল আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে সময়ক্ষেপণ করছেন। এই চারটি পক্ষকে সমন্বয়ের আগে সুনির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে না বিএনপি।

চার গ্রুপে আটকে আছেন নেতারা

বিএনপিতে ইতোমধ্যে চারটি গ্রুপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছে। এই চারটি গ্রুপের প্রথমটি হচ্ছে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বলয়, যাকে ঘিরে আছেন বিতর্কিত হাওয়া ভবনের সহকর্মীরা। এর সঙ্গে যুক্ত স্থায়ী কমিটির অন্তত তিনজন সদস্য। আলোচনা ছাড়াই বিদায়ী বছরের ২৮ জুলাই পল্টনের সমাবেশে মুঠোফোনে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রদান, ২৯ জুলাইয়ের ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি, ২৮ অক্টোবরের পর দফায়-দফায় অবরোধ-হরতালের সিদ্ধান্তগুলো এই অংশের প্রভাবে নেওয়া বলে জানান স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য।

তিনি উল্লেখ করেন, ‘মূলত ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে এই অংশটি তৎপরতা শুরু করে এবং ধীরে-ধীরে নিয়ন্ত্রণ নেয়।’

দলের গুরুত্বপূর্ণ এক নেতার মন্তব্য, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে ইরানের প্রয়াত নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির সঙ্গে তুলনা করা হয়। ইমোশনালি দলের শীর্ষনেতাকে প্রভাবিত করা হয়। এতে করে তার সামনে দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি অস্পষ্ট থাকে।’

হাওয়া ভবনে আসা-যাওয়া ছিল বিএনপির এমন একজন দায়িত্বশীল জানান, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় হাওয়া ভবনে যারা গুরুত্বপূর্ণ পদ ও দায়িত্বে ছিলেন তাদের প্রায় সবাই এখন দলের দায়িত্বে আছেন। এরমধ্যে দুয়েকজন ইতোমধ্যে মারা গেছেন।

বিএনপির দ্বিতীয় অংশটি হচ্ছে, মহাসচিব মির্জা ফখরুলবিরোধী অংশ। কোনোভাবেই তাকে ‘সাকসেস’ হতে না দেওয়া। স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যানের কেউ কেউ এবং হাওয়া ভবনের সাবেক কোনও-কোনও কর্মকর্তারাও এ অংশে যুক্ত।

মির্জা ফখরুলের ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মির্জা ফখরুলের যেকোনও বক্তব্যে কোনও ত্রুটি থাকলে সেটিকে নেতৃত্বের নজরে আনার কাজটি করেন স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য ও তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতা। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের মধ্যে দূরত্ব ধরে রাখার কাজটি করে এই অংশের নেতারা।

মহাসচিবের বিপক্ষের অংশটিকে তলে-তলে অনেকেই প্রশ্রয় দেয়, বলে দাবি করেন একজন নেতা। তিনি বলেন, ‘দলের মুখপাত্রের ভূমিকায় যখন দুজনকেই (মির্জা ফখরুল ও রিজভী আহমেদ) রাখা হয়, সেটা কার নির্দেশে ঘটছে, তা বিবেচ্য। গত ২৮ অক্টোবর যখন পুলিশের ক্র্যাকডাউনে নেতারা মঞ্চ থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন, তখন মির্জা ফখরুল একদিনের হরতাল (২৯ অক্টোবর) ঘোষণা করেন। তার কিছু সময় পরই দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অর্ধদিবস হরতালের কথা জানান। পরবর্তীতে তা সংশোধন করা হয়।’

তৃতীয় অংশে রয়েছেন দলের সংসদ সদস্য ও দলীয় পদপ্রত্যাশিত অংশ, যারা রাজপথে কর্মসূচিতে না থাকলেও অর্থ ও পদবির ভারে দলে প্রভাব বলয় সৃষ্টি করেছেন। দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় এই অংশের প্রভাব তুলনামূলক কম। কর্মসূচির সময় এই অংশের নেতাদের দেখা যায় কম। পদ বা মনোনয়নপ্রাপ্তিতে এই অংশটির তৎপরতা বেশি থাকে।

চতুর্থ অংশে আছে তৃণমূলের নেতাকর্মী। যারা বিগত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ‘ঝটিকা মিছিল বা হঠাৎ মিছিল’ কর্মসূচি পালন করেছেন দিন-রাত। কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীসহ আশেপাশের এলাকায় ‘ঝটিকা মিছিলের’ নেতৃত্ব দিয়েছেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

এ বিষয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিএনপি একটি উদারপন্থি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। দলে যেকোনও বিষয়ে যখন আলোচনা হবে, যুক্তিতর্ক হবে, ইটস অ্যা ডেমোক্রেটিক প্রসেস। সবাই তো একমত হওয়ার কথা নয়, রাজনৈতিক চিন্তা একেকজনের একেকরকম। যে চিন্তাটি যুক্তিসহকারে এগোয়, সেটিই প্রতিষ্ঠা পায়। এটা খুব স্বাভাবিক ও ন্যাচারাল প্রসেস।’

মির্জা ফখরুলের মুক্তির অপেক্ষায় আত্মগোপনে থাকা নেতারা

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন, মামলা ও রায় পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সিনিয়র নেতারা আত্মগোপনে আছেন। বিশেষ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ অন্তত ২৩ হাজার নেতাকর্মী কারাগারে থাকায় ঝুঁকি নিতে চাইছেন না তারা।

দলের কেন্দ্রীয় একজন সাংগঠনিক সম্পাদক শুক্রবার বিকালে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘২৮ অক্টোবর পরিকল্পিতভাবে মহাসমাবেশ পণ্ড করার পর সাঁড়াশি গ্রেফতার, মামলা, মামলায় রায় দেওয়ার কারণে নেতারা রিস্ক ফ্রি থাকতেই প্রকাশ্যে আসছেন না।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় একজন দায়িত্বশীল দাবি করেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও মহাসচিবের মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছেন।

২০১৬ সালের ১৯ মার্চ দলের ষষ্ঠ কাউন্সিলের পর দুই দফায় ৬০০ জনের বেশি সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করে বিএনপি। সেই সদস্যদের সংখ্যা কমে এখন ৫০২ জনে দাঁড়িয়েছে। বাকি ৯৮ জনের মধ্যে বেশিরভাগই মারা গেছেন। আবার কেউ কেউ বহিষ্কৃত, কেউবা দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী কারাগারে।

আত্মগোপনে থাকলেও ২৮ অক্টোবরের পর একমাসের মাথায় ২৮ নভেম্বর প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে যোগ দেন নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান। ফাঁকে ফাঁকে গুলশানের বাসায় ব্রিফ করেছেন ড. আবদুল মঈন খান। বয়োবৃদ্ধ ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বাসা থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া দেশের বাইরে থেকে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সালাহউদ্দিন আহমেদ দলের কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছেন।

২৮ অক্টোবরের আগে সভা-সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে বিএনপির নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আলোচনায় থাকলেও গত আড়াই মাসে তার কোনও উপস্থিতি নেই প্রকাশ্যে। এ বছরের ৯ জানুয়ারি তারেক রহমান যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সঙ্গীদের নিয়ে আলোচনা শুরু করলে ভার্চুয়ালি সামনে আসেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) ও শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কয়েকজন নেতাকে দেখা গেছে। এদের মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ড. আসাদুজ্জামান রিপন উল্লেখযোগ্য। যদিও অন্যান্য বছর এসব অনুষ্ঠানে নেতাদের ভিড় লেগে থাকে।

জানতে চাইলে স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের নেতাদের অনেকে আত্মগোপনে থাকার কারণ এখনও অনেকের নামে ওয়ারেন্ট আছে। যেমন গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বেরুতে পারছেন না, তিনি আগাম জামিন পেলে বেরুবেন। যেমন ইতোমধ্যে আবদুল আউয়াল মিন্টু জামিন পেয়েছেন।’

মির্জা ফখরুলের প্রসঙ্গে সেলিমা রহমানের ভাষ্য, ‘সরকার ইচ্ছা করেই তার জামিনের বিষয়টি বিলম্বিত করছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলাটি আবারও নিম্ন আদালতে পাঠানো হয়েছে। সরকারের ইচ্ছা বাঁকা পথে আগানো। মির্জা ফখরুলকে নিয়েও তাই করছে।’

‘চমকের’ খোঁজে

বিএনপির রাজনীতির একাধিক বিশ্লেষক মনে করেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান, নতুন সরকার গঠন হওয়ার মধ্য দিয়ে নতুন নীতি-কৌশল ও অবস্থান নির্ধারণ করতে সময় লাগছে বিএনপির। এই সময়ক্ষেপণের পেছনে পশ্চিমা একাধিক বন্ধুরাষ্ট্রের সম্ভাব্য ভূমিকা, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পরিণতির বিষয়টি রয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারের আচরণ ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর আচরণও পর্যবেক্ষণ করছেন নেতারা।

মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, গত ৯ জানুয়ারি থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে চলমান আন্দোলনে যুক্ত দল ও জোটের লিয়াজোঁ কমিটি’র ভার্চুয়াল বৈঠক হচ্ছে। ইতোমধ্যে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, গণঅধিকার পরিষদ-নুরুল হক নুর, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, গণঅধিকার পরিষদ-ফারুক হাসান, এনডিএমের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।

দলের কোনও কোনও শুভানুধ্যায়ীর দাবি, বিএনপিকে নতুন কিছু উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে জনগণের সামনে আসতে হবে। যেহেতু পর পর একাদশ ও দ্বাদশ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকারের পতন হয়নি, সেদিক থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্বের চ্যালেঞ্জই বেশি। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মনোভাব ইতোমধ্যে স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। এক্ষেত্রে তিনি বিদ্যমান সাংগঠনিক নেতৃত্ব দিয়ে আবারও আন্দোলন পুনর্গঠন করতে সক্ষম হবেন— এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই।

‘এটা ঠিক নৈতিকভাবে পরাজিত আওয়ামী লীগের মতো একটি বড় রাজনৈতিক দলকে মোকাবিলা করা বিএনপির জন্য সময়ের ব্যাপার মাত্র।’ বলে দাবি করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. লুৎফুর রহমান।

বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের এই আহ্বায়ক বলেন, ‘আমি মনে করি নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ আছে। তবে নির্বাচন হয়েছে এখনও একমাসও হয়নি, আশা করি খুব শিগগিরই বিএনপি তাদের নতুন কৌশলে কর্মসূচি ঠিক করবে এবং বিএনপি ঘুরে দাঁড়াবে কারণ তাদের পাশে দেশের জনগণ রয়েছে।’

অধ্যাপক ড. লুৎফুর রহমান বলেন, ‘নতুন কৌশলে কাউন্সিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বিএনপি, ছাত্রদলসহ অন্যান্য সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছে কাউন্সিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সবাই আশায় থাকে কাউন্সিলের, কেননা কাউন্সিল নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করে। গত কয়েক বছর ধরে আন্দোলনে থাকার কারণে বিএনপি হয়তো কাউন্সিল করতে পারেনি। আশা করি, সময় হলেই বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনগুলো তৃণমূলসহ সকল নেতাকর্মীদের চাহিদার দিকে গুরুত্ব দেবে।’

বিএনপির সংগঠনসূত্র বলছে, সারাদেশে বিএনপির কমিটিগুলোর একেকরকম চিত্র। কোথাও কমিটি আছে, কোথাও নেই, কোথাও মেয়াদোত্তীর্ণ। সেক্ষেত্রে জেলা ও উপজেলা থেকে কাউন্সিল শুরু করতে হবে।

কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগীয়) ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আলাপ-আলোচনা চলছে দলকে আবার সুসংগঠিত করে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন গড়ে তুলে দাবি আদায়ের বিষয়ে। আমাদের অত্যন্ত সুশৃঙ্খল নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকে ২৮ অক্টোবর সরকার ক্র্যাকডাউন করে পণ্ড করেছে। পরিস্থিতিতে সৃষ্টি করে আমাদের দলের সিনিয়রনেতারাসহ অন্তত ২৩ হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ওরা নির্বাচন নাটক মঞ্চস্থ করলেও জনগণ এই নাটকে অংশ নেয়নি।’

ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন উল্লেখ করেন, ‘জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দল সুসংগঠিত করে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন অব্যাহত রাখবো। গণতান্ত্রিক বিশ্ব আমাদের সঙ্গে আছে। আশা করি শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো।’

জানতে চাইলে স্থায়ী কমিটির নেতা সেলিমা রহমান বলেন, ‘আগে আমাদের নেতাকর্মীরা স্থির হোক, তাদেরকে বের করে আনতে হবে। এরপর সংগঠন পুনর্গঠনের বিষয়, কাউন্সিলের বিষয়। কী হবে জানি না, আমরা চেষ্টা করছি নেতাকর্মীদের মুক্ত করতে।’