ক্রীড়া ডেস্কঃ
মিরপুরের শের-এ বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে বলা হয় হোম অব ক্রিকেট। উপমহাদেশের প্রায় সব উইকেটের মতোই এটিও বলতে গেলে ধীরগতির এবং স্পিন-সহায়ক উইকেট। তবে কারো কারো কাছে মিরপুরের উইকেট একেবারেই মরা। কোনোভাবেই ব্যাটিং সহায়ক বা স্পোর্টিং উইকেট না। আর এমন পিচে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ঠিক কতটা বেমানান, সেটার কথা বলে গিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রাও।
বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর এমন কথা শোনা গিয়েছিল স্বয়ং খেলোয়াড়দের কাছ থেকেই। জাতীয় দলের নিয়মিত মুখ নাজমুল হোসেন শান্ত সরাসরিই বলেছেন, আরও বেশি স্পোর্টিং উইকেট চান তারা। এরপরেই বিসিবি কর্তাদের মুখ থেকেও শোনা গেল নানান কথা। মিরপুরের রান উইকেটে রান ফেরানো হবে এমন কথাবার্তাও নজরে এসেছে অনেকের।
কিন্তু প্রথম দিনে খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার মতো উইকেট দেখা যায়নি মিরপুরে। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ১৭৭ রান চেজ করে চট্টগ্রাম জিতলেও প্রথম ম্যাচে রান উঠেছে দেড়শ এর নিচে। বিসিবির কর্তারা এমন কিছুতে তৃপ্তি পেলেও বিপিএলের ইতিহাস আর সমসাময়িক অন্যান্য লিগ বিবেচনায় মিরপুর পাশ মার্ক পেল কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে।
যদিও বিপিএলে কেবল উদ্বোধনী ম্যাচই পার হয়েছে। তাই তুলনাটা আপাতত নিজেদের অতীতের সঙ্গেই করা ভালো। কিন্তু এখানেও আক্ষেপ থেকে যাবে বাংলাদেশের দর্শকদের। ২০১৫, ২০১৬ কিংবা একেবারে শুরুর দুই আসরে উদ্বোধনী ম্যাচেই ১৬০ পেরুনো ইনিংস দেখেছিল মিরপুরের শের-এ বাংলা স্টেডিয়াম। ২০১৯-২০ বিপিএলেও সিলেট থান্ডারস এবং চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ম্যাচে রান হয়েছিল ১৬০ এর বেশি।
এমনকি ২০০ পেরুনো স্কোরও আছে এই সময়ে। যদিও সবশেষ দুই বিপিএলে উদ্বোধনী ম্যাচ শেষ হয়েছে ১০০ এর নিচে। এটাই হয়ত খানিক তৃপ্তি দেবে আয়োজকদের। অবশ্য টুর্নামেন্টের সামগ্রিক অতীত দেখলে প্রথম দিনে মিরপুর নিয়ে আশাবাদী হওয়ার খুব বেশি রসদ নেই।
তবে বিপিএলে বরাবরই দ্বিতীয় ম্যাচে রান বেড়েছে। গত আসরে রংপুর উদ্বোধনী দিনে এসেছিল ১৭৬ রান। কুমিল্লাও লড়েছিল সেবার সমানতালে। ২০২২ বিপিএলে ঢাকা-খুলনা ম্যাচে ১৮০ রানের বেশি তাড়া করে জয় পায় খুলনা। তার আগের আসরে কুমিল্লা পেয়েছিল ১৭৩ রানের বড় সংগ্রহ। সবমিলিয়ে আগের বিপিএলগুলোর কিঞ্চিৎ ভাল চিত্র দেখা গিয়েছে শের-এ বাংলায় সেটা বলা চলে।
একই সময়ে বিশ্বের অন্যান্য লিগে ঠিক কী পরিমাণ রান হচ্ছে, তাতে একবার নজর রাখা যেতে পারে। অস্ট্রেলিয়াতে চলমান বিগ ব্যাশ লিগের সবশেষ দশ ম্যাচের মধ্যে ৯টিতে ফলাফল এসেছে। তাতে দুই দলের কেউই দেড়শ করতে পারেনি এমন ম্যাচ আছে দুইটি।
আরও স্পষ্ট করলে ৯ ম্যাচে ১৮ ইনিংসের মাঝে ১৫০ হয়নি এমন ঘটেছে ৭ বার। যার মধ্যে একবার ছিল রানচেজ। যেখানে ১৫০ করা সম্ভবও ছিল না। ৯ ইনিংসে আবার ছাড়িয়েছে ১৬০ রান।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে রানের কেমন উৎসব চলছে তা নিউজিল্যান্ড এবং পাকিস্তানের সিরিজ দেখেই আন্দাজ করা যায়। সুপার স্ম্যাশেও রান হচ্ছে দেদারসে। দক্ষিণ আফ্রিকায় এস২০ এর ১১ ম্যাচের ২২ ইনিংসে ৬ বার রান উঠেছে ২০০ এর বেশি। মিরপুরের উইকেটে জমজমাট বিপিএল পেতে সামনের ম্যাচগুলোতে আরও বেশি রানের দরকার, তা বলাই বাহুল্য।