জনগণকে ঈদের কেনাকাটার সুযোগ দিতে মাঠ প্রশাসনকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
রংপুর জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছবি: ফোকাস বাংলা
ঈদে মানুষকে কেনাকাটার সুযোগ করে দিতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি পারিবারিকভাবে যেন ঈদের আনন্দটা করতে পারে, সে ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দেন তিনি।
সোমবার (৪ মে) রংপুর জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময়কালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঈদের সময় মানুষ কেনাকাটা একটু করবেই। বাজার একটু করতেই হবে। এটা বন্ধ করা ঠিক হবে না। মানুষকে সচেতন করে এই ব্যবস্থাটা করতে হবে।’
এর আগে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কে এম তারিকুল ইসলাম করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ঈদের আগে দোকানপাট না খোলার জন্য ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেন।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘ঈদের মার্কেট যদি নিয়ন্ত্রণ না করা হয়, তাহলে করোনার আরও বিস্তার ঘটতে পারে। ঈদের সময় যাতে সামাজিক দূরত্ব অব্যাহত রাখতে পারি, সে বিষয়ে আপনার দৃষ্টি প্রত্যাশা করছি।’
তিনি বলেন, ‘ঈদের সময় আমরা অতিরিক্ত জামাকাপড় বা মূল্যবান খাদ্যসামগ্রী মাছ, মাংস ও পোলাও খাওয়া বিরত থাকবো। এ খাতের টাকা আমরা দরিদ্রদের কল্যাণে নিবেদিত করতে চাই।’
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঈদের সময় মানুষ কেনাকাটা একটু করবেই। বাজার একটু করতেই হবে। এটা বন্ধ করা ঠিক হবে না। বরং ধীরে ধীরে আমাদের আরেকটু ছাড় দিতে হবে, যাতে মানুষ তার দৈনন্দিন জীবনযাপন করতে পারে। আর রোজার সময় মানুষ স্বাভাবিক কেনাকাটা স্বাভাবিক জীবনযাপন এবং ঈদের সময় তারা যেন একটু…একেবারে বেশি লোক সমাগম করে নয়। নিজেরা পারিবারিকভাবে যেন উদযাপন করতে পারে, ঈদের আনন্দটা যেন পায়। সেই ব্যবস্থা করতে হবে। সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।’
সব বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঈদে মানুষ কেনাকাটা করবে সেই ব্যবস্থাটা নিতে হবে। মানুষকে সচেতন করে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে—এটা সেভাবেই করে নেবেন। মানুষ যাতে নিজে সুরক্ষিত থেকে বাজারঘাট করে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।’
এর আগে ভিডিও কনফারেন্সের উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছু যেহেতু একটু থমকে গিয়েছিল, যেহেতু রমজান মাস, এই রমজান মাসে যাতে কেনাবেচা চলতে…তার জন্য দোকান-পাট খোলা বা যেহেতু রোজার সময়, ঈদের কেনা বা সেহরি খাওয়া বা রোজার মাসে বাজারহাট করা, সেগুলো যাতে চলতে পারে, সেদিকে আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি রেখে সেগুলো খোলা রাখারও নির্দেশ দিয়ে দিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি জেলায় জেলাভিত্তিক যেসব ছোটখাটো ক্ষুদ্র শিল্প রয়ে গেছে, সেগুলো তারা চালাতে পারবেন। সেইভাবে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে, খুব বেশি খোলামেলা সবার সঙ্গে মেলামেশা বা এক জায়গায় জড়ো হওয়া, বা খুব বড় জনসমাগম করা—এই জায়গা থেকে সবাইকে মুক্ত থাকতে হবে। কারণ, সেখানে কিন্তু সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়ে গেছে। আমরা ধীরে ধীরে কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান খুলে দিচ্ছি। যারা বের হবেন, তারা নিজে সুরক্ষিত থাকবেন। অপরকেও সুরক্ষিত রাখবেন। আর বের হওয়ার সময় অবশ্যই মাস্ক পরে বের হবেন।’
রেলপথে পণ্য পরিবহনের নির্দেশনার কথা তুলে ধরে পঞ্চগড়ের সঙ্গে মতবিনিময়কালে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা রেল চালু করে দিয়েছি। পচনশীল পণ্য বা একেক এলাকায় বেশি উৎপাদন হয় যেটা, সেটা যেন দ্রুত পরিবহন করা যায়—তার জন্য রেলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু চালু হয়েছে।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রী রেল চালু করার বিষয়ে পদক্ষেপ জানতে চান রেলমন্ত্রীর কাছে।
এ সময় রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘যারা কাঁচামালের ব্যবসা করে, এদের সঙ্গে রেলের এতদিন কিন্তু কোনও যোগাযোগ ছিল না। এই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যাতে আমরা একটা সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারি, আমরা ইতোমধ্যে তিনটা লাগেজ ভ্যান চালু করেছি। আরও ২৫০ লাগেজ ভ্যান আনার পরিকল্পনা করেছি, যেগুলো সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।’