নৌকার নির্বাচন করায় হাসপাতাল বেডে কাতরাচ্ছেন ছাত্রলীগ কর্মী
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
জেলা প্রতিনিধি ফরিদপুর
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটলেও ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় এখনো সহিংসতা কাটেনি। নির্বাচনকালীন সময়ে নৌকার পক্ষে কাজ করায় আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর গ্রামের হাবিব শেখ নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রলীগ কর্মীর বাবা তারা শেখ বাদী হয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সৈয়দ শরিফুল ইসলামসহ ৯ জনকে আসামি করে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) থানায় মামলা করেছেন। মামলায় আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।তবে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত মামলার কোনো আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন ওসি মো. সেলিম রেজা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুর রহমানের (তৃতীয়বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং বর্তমান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী) পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে হাবিব শেখ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। বিষয়টি নিয়ে এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুর রহমান দোলনের সমর্থক বিদ্যাধর গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য সৈয়দ শরিফুল ইসলামের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় হাবিবের।
দ্বন্দ্বের জেরে গত রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় স্থানীয় মহিষারঘোপ বাজারে যাওয়ার পথে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ছাত্রলীগ কর্মী হাবিব শেখের (২১) ওপর ইউপি সদস্য সৈয়দ শরিফুল ইসলাম ওরফে সরফেজ মেম্বারের হুকুমে দেশি অস্ত্রসহ লাঠিসোটা নিয়ে ৮-১০ জন হামলা করেন। হামলায় আরও অংশ নেন সৈয়দ জাকের আলী, সৈয়দ আজিবুর আলী, সৈয়দ ইকলাজ আলী, আজিজুর মোল্লা, ইসমাইল মোল্লা, অপু মোল্লা ছাড়াও আরও কয়েকজন অজ্ঞাতনামা। এ সময় হাবিবকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
হামলায় আহত হাবিব শেখের মেজভাই উজ্জ্বল শেখ বলেন, মহিষারঘোপ বাজারে হাবিব ওইদিন সন্ধ্যায় একাই যাচ্ছিল। নৌকার নির্বাচন করায় পূর্ব থেকেই আসামিরা বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিচ্ছিল আমাদের। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ৫ নম্বর আসামি আজিজুরের বাড়ির সামনে গেলেই হাবিবকে ঘিরে ফেলে। এ সময় শরিফুল মেম্বার লোকজনকে হুকুম দিয়ে বলেন ‘আজ ওকে নৌকার নির্বাচন করার সাধ মিটিয়ে দে। যত টাকা লাগে আমি দেবো, কোর্ট কাচারি আমি সামলাবো।’ বলা মাত্রই আসামিরা লোহার রড, রামদা দিয়ে আমার ভাইকে মেরে মারাত্মক জখম করে।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য সৈয়দ শরিফুল ইসলাম বলেন, আমি ঘটনার দিন বাড়ি ছিলাম না। মাকে নিয়ে নড়াইলে ছিলাম। পরের দিন সকালে এসেছি। গ্রামে গ্রুপিংয়ের কারণে আমাকে আসামি করে মামলা দেওয়া হয়েছে।এ বিষয়ে বুধবার সকালে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম রেজা জানান, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকার পরিবেশ শান্ত করে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। এখনো কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারে তৎপর রয়েছে।