জেলা প্রতিনিধি মুন্সিগঞ্জ
আধুনিকায়নের যুগে বড় হয়ে ওঠা অনেক শিশুরই পরিচয় হয় না ফুল-ফল-বনজ গাছের সঙ্গে। এমনই প্রেক্ষাপটে বৈচিত্র্যপূর্ণ তরুরাজির সঙ্গে শিশু-কিশোরদের বন্ধন তৈরিতে এবার এক ভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসন। জেলায় প্রথমবারের মতো একযোগে ৭ শতাধিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজহাতেই গড়ে তুলছে মিনি বাগান। যেখানে বিভিন্ন জাতের বৃক্ষরোপণ-পরিচর্যার পাশাপাশি কার্যকারিতাও জানতে পারছে তারা।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে ‘আমার স্কুল, আমার বাগান’ নামের এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আবু জাফর রিপন। টঙ্গীবাড়ী উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় ও পরে সদর উপজেলার বছিরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ে ফিতা কেটে উদ্বোধন করা হয় কার্যক্রম। পরে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের বাগান পরিদর্শন ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকতা ও বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে দুটি বিদ্যালয়েই ঘুরে দেখা যায়, কোথাও ফুটেছে গাঁদা, কোথাও গোলাপ, ডালিয়াসহ নানা জাতের রঙিন ফুল। বাহারি ফুলে ভরে উঠেছে বিদ্যালয়ের আঙিনার মিনি বাগান। গাছ রোপণ থেকে শুরু করে দলবেঁধে নিজ হাতে পরিচর্যা করছে শিক্ষার্থীরা। বাগান করার কাজে অংশ নিতে পারায় আনন্দ প্রকাশ করে তারা।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, এসব বাগানের মাধ্যমে নতুন নতুন ফুল-ফল গাছের সঙ্গে পরিচিত হতে পারছে তারা। শিক্ষকদের মাধ্যমে জানতেও পারছে এসব ফুলের কার্যকারিতা।
পাইকপাড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্তার হোসাইন বলেন, আমাদের পাঠ্যবইয়ে বাগান করার বিষয়টি রয়েছে। জেলা প্রশাসনের এমন আয়োজনে শিক্ষার্থীরা হাতে কলমে গাছের সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি করবে। লাগাতার পাঠ্যবই পড়ে যখন ক্লান্তি আসবে তখন ফুলগাছের সঙ্গে থাকলে সেই ক্লান্তি দূর হবে। মানসিক বিকাশেও কাজ করবে এ কার্যক্রম। বৃক্ষপ্রেমের পাশাপাশি গাছ সম্পর্কে সচেতনাও তৈরি হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর রিপন জানান, শিশু-কিশোরদের যদি শৈশব থেকে বৃক্ষ ও বাগানের সঙ্গে পরিচয় থাকে, সচেতনতা তৈরি করা যায় তাহলে তা কাজে লাগবে সারাজীবন। স্কুল হচ্ছে সবচেয়ে আনন্দের জায়গা। তাই স্কুলকে যত বেশি আনন্দময় করা যাবে ততোবেশি শিক্ষা বাস্তবমুখী হবে, সফল হবে। যেহেতু শিক্ষার্থীর দিনের বড় একটি সময় স্কুলে কাটায় তাই বিদ্যালয় আঙিনায় ‘আমার স্কুল, আমার বাগান’ কার্যক্রম করা হলো। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাড়িতেও এমন বাগান করতে, গাছ সম্পর্কে জানতে উৎসাহ পাবে।
তিনি বলেন, প্রথম দিনে ৯টি এবং পর্যায়ক্রমে জেলার ৬১০টি প্রাথমিক ও ১২৭টি উচ্চ বিদ্যালয়ে গড়ে তোলা হবে এমন মিনি বাগান। যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নতুনভাবে পরিচিত হবে তরুরাজির সঙ্গে।