নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আনতে আগামী মাসে চুক্তি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। চুক্তির খসড়াও তৈরি করা হয়েছে। এর আগে সরকার নেপালের সঙ্গে জলবিদ্যুৎ আমদানির জন্য এমওইউ সই করে। এর ফলে নেপালের জলবিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশের বিনিয়োগের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগে নেপালে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব অনুমোদন করেছিলেন। নেপাল ও ভুটানে এই অর্থ বিনিয়োগ করা গেলে দেশের বাইরে বিদ্যুৎ খাতে এটি বাংলাদেশের প্রথম বিনিয়োগ হবে।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, ভারতীয় কোম্পানি জিএমআর-এর সঙ্গে যে চুক্তি করা হয়েছে, তার ভিত্তিতে ওই কোম্পানিটি ভারতে সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করছে। আমরা এখন নেপালের সঙ্গে যে চুক্তি করছি, তা বিদ্যুৎ আমদানির, ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ রফতানির চুক্তি করবো।
২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে নেপালের জ্বালানি মন্ত্রী জনার্দন শর্মা ঢাকা সফরে আসেন। ওই সময়ের আলোচনায় নেপাল-বাংলাদেশ জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। এছাড়া ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং গত মার্চে বাংলাদেশে এলে সেখানে জলবিদ্যুৎ নির্মাণের প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ। তবে করোনাকালীন বিষয়টি খুব বেশি দূর এগোয়নি।
নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার ও ভারতের অরুণাচল মিলিয়ে এক লাখ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। তবে এই সম্ভাবনার খুব সামান্য পরিমাণ ব্যবহার হচ্ছে। দেশগুলো এই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে এই অঞ্চলের জ্বালানি সমস্যার সমাধান সম্ভব।
বাংলাদেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কাপ্তাইয়ে অবস্থিত। বর্ষা মৌসুমে ২৩০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব, কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে কেন্দ্রটি পূর্ণমাত্রায় চালানো সম্ভব হয় না। সরকার দেশের অভ্যন্তরে জরিপ করে দেখেছে, এছাড়া অন্য কোথাও জল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ সম্ভব নয়।
বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন খরচ প্রতি ইউনিটে ৩০ পয়সা। সে বিবেচনায় প্রতিবেশী দেশগুলো থেকেই বিদ্যুৎ আমদানি করা গেলে সাশ্রয়ী মূল্যে তা পাওয়া সম্ভব।