নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর পুরান ঢাকার কদমতলী থানার জনতাবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি অপহরণ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন– সেনাবাহিনীর সাবেক করপোরাল মো. মিজানুর রহমান (৪৪), মনির হোসেন (৪২), শান্ত মিয়া (২৬) ও মহসীন আহমেদ (৩৮)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে অপহরণের কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস, চাপাতি, দা, ডিবি পুলিশের পরিচয়পত্র, সাংবাদিকের পরিচয়পত্র, দড়ি, গামছা, মোবাইল সেট, সুইচ গিয়ার, খেলনা পিস্তল ও হ্যান্ডকাফ জব্দ করা হয়।
পুলিশ বলছে, সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্যের নেতৃত্বে একটি চক্র ঈদকে টার্গেট করে অপহরণের মিশনে নেমেছিল। মাওয়া থেকে ডিবি পরিচয়ে এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ নিয়ে নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় ফেলে পুরান ঢাকা হয়ে মুন্সিগঞ্জে ফেরার পথে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চক্রের মূলহোতাসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ওয়ারিতে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির ওয়ারি বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইকবাল হোসাইন।
তিনি বলেন, ওয়ারির কদমতলী থানার জনতাবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভুয়া ডিবি পরিচয়ে একটি অপহরণ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপহরণ চক্রটির মূলহোতা মিজানুর রহমান। তিনি সেনাবাহিনীর সাবেক করপোরাল। চাকরিকালীন র্যাবেও কর্মরত ছিলেন। তিনি অপহরণের পর ভুক্তভোগীদের এসব পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে মুক্তিপণ হাতিয়ে নিতেন। তার চক্রের সবাই মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া এলাকার বাসিন্দা। তিন বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে নিয়মমতো অবসরে যান। এরপর তিনি অপহরণ চক্র গড়ে তোলেন।
ইকবাল হোসাইন বলেন, মিজানুর রহমান কখনো কখনো সাংবাদিক বলে পরিচয় দিতেন। এজন্য তিনি একটি পত্রিকার আইডি কার্ড ব্যবহার করতেন। এ ছাড়া টার্গেট করা ব্যক্তিকে তুলে নিতে ডিবি পরিচয় ব্যবহার করতেন। এরপর গাড়িতে তুলে খেলনা পিস্তল দেখিয়ে ভয় দেখাতেন। এমনকি গামছা দিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়ে নির্জন এলাকায় ফেলে যেতেন। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের পর মোবাইল ফোনে অপহরণের তথ্য-প্রমাণ পেয়েছি। তবে ভুক্তভোগীকে শনাক্ত করতে পারিনি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মিজান ও তার সহকারীরা মূলত ঈদকে টার্গেট করে অপহরণের মিশনে নেমেছে। আজ সকালে মাওয়া থেকে একজনকে অপহরণ করেন। এরপর তার কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়ে নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় ফেলে কদমতলী এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় আমরা অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করি। গ্রেপ্তার মনিরের বিরুদ্ধে মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তারা এখন পর্যন্ত কতজনকে অপহরণ করেছে, সেই বিষয়ে তদন্ত চলছে।