জেলা প্রতিনিধি, ফরিদপুর
ফরিদপুরে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী শিশু আদেল উদ্দিন সরদারকে (১৩) হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে দুইজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাদের প্রত্যেককে তিন মাস করে বিনাশ্রম করাদণ্ড ভোগ করতে হবে।গত ২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি এ হত্যার ঘটনা ঘটে। হত্যার ১২ বছর দুই মাস পর আজ এ রায় ঘোষণা করা হলো। রোববার (৩১ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. শিহাবুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুই আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। রায়ের পর তাদের পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়া ওই দুই আসামি হলেন, ভাঙ্গার মালিগ্রাম এলাকার মো. সিকিম আলী (৪০) ও সদরপুরের চরমানাইয়ের আকরাম মাতুব্বর (৪৭)।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের শিকার ওই শিশুর নাম আদেল উদ্দিন সরদার। তিনি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নাছিরাবাদ ইউনিয়নের দুয়াইর গ্রামের দরিদ্র কৃষক খালেক সরদারের ছেলে। শিশুটি স্থানীয় সৈয়দ জয়নাল আবেদিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বাড়ির পাশে দুইশ গজ দূরে চরদুয়াইর মোল্লার মোড় নামক এলাকায় ইলি মোল্লার মুদি দোকানে টেলিভিশন দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পুলিশ নিখোঁজের ৮ দিন পর ১৪ ফেব্রুয়ারি নাসিরাবাদের মোল্লার মোড় থেকে আনুমানিক সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণপাড়া-শিমুল বাজার আঞ্চলিক সড়কের পূর্বপাশে শাহ আলম মাতুব্বরের গম ক্ষেত থেকে গলিত ও ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা খালেক সরদার ওই বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় মো. সিকিম আলী ও আকরাম মাতুব্বরকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১২ সালের ৩০ নভেম্বর ভাঙ্গা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুহাম্মদ মোতালেব হোসেন আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করেন।
ওই আদালতের ভারপ্রাপ্ত পিপি সানোয়ার হোসেন বলেন, আসামিদের সঙ্গে শিশুটির পরিবারের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। এ বিরোধের জেরে ওই শিশুটিকে ডেকে মোল্লার মোড় এলাকা থেকে ডেকে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিনিয়ত দেশে হত্যাকাণ্ডে লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে চলছে। এ রায় একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে এবং জমি নিয়ে বিরোধজনিত কারণে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।