জেলা প্রতিনিধি রাঙ্গামাটি
পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোর প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু, বিহু যা বৈসাবি নামেও পরিচিত। এই সামাজিক উৎসব উপলক্ষে রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে ৪ দিনব্যাপী মেলা আয়োজন করা হয়েছে। এ মেলার মধ্যে দিয়ে পাহাড়ে শুরু হলো বৈসাবির আমেজ।
উৎসবকে সামনে রেখে বুধবার (৩ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণ থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।
শোভাযাত্রাটিতে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের লোকেরা নিজ নিজ সম্প্রদায়ের পোশাক পরে অংশগ্রহণ করেন। পরে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান (এমপি)।
রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি সংসদ সদস্য ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা, রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সোহেল আহমেদ, যুগ্ম সচিব ও রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহা. আশরাফুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মোশারফ হোসেন খান, পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিস্টিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রনেল চাকমা প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান (এমপি) বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠির মানুষের সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বসবাসের দৃষ্টান্তের উদাহরণ। এ পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের ভিন্ন ভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে। বর্তমানে এ ভাষা ও সংস্কৃতি বিশ্বের মাঝে ছড়িয়ে দিতে এবং রক্ষণাবেক্ষণ করতে সরকার আন্তরিক। আমাদের মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সার্বিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যাচ্ছে এবং সামনেও করবে। এখানকার সংস্কৃতি রক্ষা ও চর্চায় যা কিছু করার আমরা করবো।
৪ দিনের সংস্কৃতি মেলায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর নানা খাবার, ঐতিহ্যবাহী বস্ত্র ও হস্তশিল্প সামগ্রী ২৫টি স্টলে প্রদর্শিত হচ্ছে। মেলায় প্রতিদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে।
মূলত আগামী ১২, ১৩ এবং ১৪ এপ্রিল এই তিন দিনব্যাপী মূল উৎসব পালন করা হলেও এপ্রিল মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করে থাকে।